পার্কিং ফি নিয়ে দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়েছিলেন মেয়র। ফি বিতর্কে নতুন করে মুখ খুলতে চাননি ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুরসভায় পার্কিংয়ের দায়িত্বে থাকা দেবাশিস কুমারও কোনও রা করেননি। তৃণমূলের অন্দরের টানাপোড়েন প্রকাশ্যে আসতেই 'ক্লোজড চ্যাপটার' বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। এসবের মধ্যেই সোমবার কলকাতা পুর এলাকায় পার্কিং নিয়ে মুখ খুললেন মেয়র। ঘোষণা করলেন, এবার থেকে কলকাতা পুরসভার সমস্ত পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার করা হবে।
কী বলেছেন মেয়র?
সোমবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, 'ওপেন টেন্ডার হলে অনেকেই টেন্ডার ফেলতে দেন না বলে অভিযোগ আসে। তাই এবার থেকে কলকাতা পুরসভার সমস্ত টেন্ডারই ই-টেন্ডার হবে।' মেয়রের দাবি, ' রাজ্য সরকারের ফিন্যান্স রুলস মেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।'
চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে কলকাতা পুরসভা শহরে ঘন্টা পিছু গাড়ি পার্কিংয়ের ফি এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। যা নিয়েই অসন্তোষ দানা বাঁধে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরসভার এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কিছুই জানতে না বলে গত শুক্রবার দাবি করে কুণাল ঘোষ। গোটা সিদ্ধান্তই দলের নীতির পরিপন্থী বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি ছিল, পুরসভার পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে জানতে পেরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই পদক্ষেপ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করতে মেয়রকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেছিন, ‘পার্কিংয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ওপর অনেকটা চাপ বেড়েছে। বিষয়টা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ে কাছে পৌঁছেছে। শহরে পার্কিং ফি বৃদ্ধির মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষ হয়নি। তিমি জানতে না এই ধরণের চাপ মানুষের উপর পড়তে চলেছে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সিদ্ধান্ত যেস্তরেই বা যাঁরাই নিয়ে থাকুন কোনও অবস্থাতেই সরকার বা দল এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে না। মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে কিছুই জানতেন না।’ কুণালের সংযোজন ছিল, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নীতি যেন আম জনতার উপর চাপ না বাড়ানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার মহানাগরিককে জানিয়েছেন বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহর করতে। আজকের মধ্যেই সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকরের জন্য কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানানো হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। প্রশ্ন ওঠে, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত কেন দলীয় পদাধিকারীর মুখে উঠে আসবে। জানা যায়, এনিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মেয়র। তবে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। প্রসঙ্গটি'ক্লোজড চ্যাপটার' বলে জানান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকও।