সংসদে স্মোক ক্যান নিয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় জোড়াল হয়েছে বাংলা যোগ। এবার বুধবারের ঘটনায় 'মাস্টারমাইন্ড' ললিত ঝায়ের সঙ্গে নাম জড়াল তৃণমূলের। বিজেপি নেতৃত্বের তরফে বৃহস্পতিবার একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের সঙ্গে ললিতকে। এছাড়াও ছবিতে দেখা যাচ্ছে যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য বক্সীকেও।
লক্ষ্মীবারের বিকেলে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সংসদে স্মোক ক্যান হামলার ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন ললিত ঝা-য়ের ছবি সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ডঃ সুকান্ত মজুমার লেখেন, 'গণতন্ত্রের পীঠস্থানে হামলার মাস্টারমাইন্ড ললিত ঝা-র সঙ্গে তাপস রায়ের দীর্ঘ সময় ধরে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ফলে তাপস রায়কে তদন্তের আওতায় আনার জন্য পোস্ট করা ছবিটি কী যথেষ্ট নয়?' নিজের পোস্টতৃণমূল কংগ্রেস, তাপস রায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে ছেন সুকান্ত। সঙ্গে হ্যাশট্যাগে লিখেছেন 'শেম অন টিএমসি।'
এ নিয়ে বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছেন, 'সোশাল মিডিয়ায় বলে কিছু হবে না। ওদের হাতেই তো কেন্দ্রীয় সব এজেন্সি সিবিআই, এসএসবি, এসআইবি, সেন্ট্রাল আইবি, এনআইএ আছে। তদন্ত করে দেখে সব প্রমাণ করুক। ছ্যাবলামো হচ্ছে।' তৃণমূলের অন্যতম নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, 'বিজেপির সুকান্ত মজুমদার ভন্ডামির নতুন রেকর্ড গড়তে চলেছেন। আপনি এই সব প্রশ্ন আপনার দলের সাংসদ, এই হামলার মূল ষড়যন্ত্রীকে করছেন না কেন?'
সংসদে স্মোক ক্যান তাণ্ডবের ঘটনায় ক্রমশ জোড়াল বাংলার যোগ। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন ললিত ঝা ভাড়া থাকতেন বড়বাজারে। টিভিতে সংসদে স্মোক ক্যান নিয়ে তাণ্ডবের খবর দেখে তাঁকে শনাক্ত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সংসদ তাণ্ডবে সন্দেহভাজন ললিত ঝা এখন বেপাত্তা। ললিত কলকাতার ২১৮, রবীন্দ্র সরণী-তে একতলার ঘরে ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় কিছু বাচ্চাকে পড়াতেন। তবে, বছর দেড়েক আগে হঠাৎ চলে যান এই ঠিকানা থেকে। এখন সেই দরজায় তালা বন্ধ।
আরও পড়ুন- অভিযুক্তের সঙ্গে ফ্রেমবন্দি তাপস, ‘এমন ছবি অনেকেই তোলে’, তেলেবেগুনে জ্বলে ফোঁস তৃণমূল নেতার
এই ঘটনায় নাম উঠেছে নীলাক্ষ আইচ নামে এক পড়ুয়ার। নীলাক্ষ সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছেন, সংসদের বাইরে স্মোক ক্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ভিডিও ললিত তাঁকে বুধবারই পাঠিয়েছিলেন। নীলাক্ষ-র দাবি, তিনি কলেজ থেকে বেরিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ওই ভিডিও এসেছে বলে দেখলেও পুরোটা দেখে উঠতে পারেননি। গত এপ্রিলে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে ললিতের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছিল। ললিত সেই সময় কলকাতায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
আরও পড়ুন- বরখাস্ত নিরাপত্তা কর্মীরা, সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনে আদালতে কী জানাল পুলিশ?
জানা গিয়েছে, সংসদের স্মোক ক্যান হামলার ভিডিও কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে মিডিয়া কভারেজের জন্য পাঠিয়েছিলেন ললিত ঝা। গোটা ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বুধবারের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজনীতি নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, থেমে নেই রাজনীতির চাপানউতোর।