ফের জামিন নাকচ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত সাতজনের। পার্থ, সুবীরেশ, কল্যাণময়-সহ সাত জনেরই ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার তাঁদের ফের জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক। কীভাবে ছড়িয়েছে দুর্নীতির জাল, তা জানতে জেলে রেখেই জেরা করতে চায় সিবিআই। আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে পার্থ, কল্যাণময়, শান্তিপ্রসাদদের।
এদিকে, এদিন আদালতে বিস্ফোরক কথা বলেন পার্থ। প্রাক্তন মন্ত্রী জানতে চান, তদন্তের অজুহাতে কি তাঁকে অনন্তকাল হেফাজতে রেখে দিতে চাইছে সিবিআই? নিজের জামিন চেয়ে বিচারকের কাছে সোজাসুজি জানতে চান পার্থর আইনজীবী সেলিম রহমান। পার্থর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে আইনজীবী আদালতে জানান, "শেষ ১৪ দিন কী তদন্ত করেছে সিবিআই, কী অগ্রগতি হয়েছে যে আমাকে জেলে রাখতে হবে? অনন্তকাল কি হেফাজতে থাকব নাকি?"
এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টেপাাধ্যায়কে। আদালেত পেশ শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাাধ্যায়, অশোক সাহাকেও। এরই পাশাপাশি আদালেত আনা হয় নিয়োগ দুর্নীতিতে মিডলম্যান হিসেবে কাজ করা প্রসন্ন রায় এবং প্রদীপ সিংকেও। জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফের ধৃতদের আদালতে তোলা হয়।
এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে নেমে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়েছে তদন্তকারীদের। পাহাড় প্রমাণ টাকা উদ্ধারই শুধু নয়, দুর্নীতির অভিযোগে ধৃতদের নামেও মিলেছে বিপুল সম্পত্তির হদিশ। তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই চাঞ্চল্যকর একাধিক তথ্য সামনে এসেছে। এসএসসির গ্রুপ সি মামলা এবং নবম-দশম শ্রেমিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো হাজিরা নির্দেশ পেয়ে আদালতে প্রাক্তন এসএসসি কর্তা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অন্য অভিযুক্তরাও।
সকালে কোর্টে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নেরই জবাব দেননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। চুপচাপ হেঁটে ঢুকে যান কোর্ট লকআপে। অন্য অভিযুক্তরাও সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি।
আরও পড়ুন- একধাক্কায় ১৭-এর ঘরে নামল পারদ, জাঁকিয়ে শীত দুয়ারেই?
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে চাকরির দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তোলা এবং সেই টাকা কীভাবে কার মাধ্যমে কোথায় পৌঁছেছে সেব্যাপারেও নানা তথ্য পেয়েছে সিবিআই। এর আগেও আদালতে সেই তথ্য তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে তদন্তের জাল পুরোপুরি গোটাতে আরও কয়েকমাস সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে এখনই অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় বাধা আশার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। এই সব আশঙ্কার কথা তুলে ধরে আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের আবারও জেলে রাখারই আবেদন জানান সিবিআই আইনজীবী।