মন্ত্রী পদ খুইয়েছেন, মান-সম্মানেরও দফারফা। কিন্তু, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় 'হেভিওয়েট' পার্থর স্বভাব বদলায়নি! জেলেবন্দি হয়েও প্রভাবশালীদের মতই জীবযাপনের শখ তৃণমূলের অপসারিত মহাসচিবের। শারীরিক অবস্থার দোহাই দিয়ে তাই এবার প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পূর্ণ সময়ের জন্য একজন সহায়ক চেয়ে আর্জি জুড়েছেন পার্থ!
পার্থর চিঠি
প্রায় ১৫ মাস গারদবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগে জেল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি লেখেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান যে, জেলে তাঁর ওঠাবসা হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই তাঁর নাছোড় আর্জি, ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁকে একজন সহায়ক দেওয়া হোক।
এসএসকেএমের চিকিৎসকদের কী বললেন পার্থ?
পার্থর চিঠি পেয়েই প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ এসএসকেএম হাসপাতালকে সম্পূর্ণ বিষয়টি জানায়। তারপর ওই হাসপাতালের তিনজন ডাক্তার পার্থকে দেখতে জেলে যান। তাঁর শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে জেল কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেন ওই চিকিৎসকরা। জানা গেছে, ডাক্তারদের কাছেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর হাঁটাচলার সমস্যার কথা জানান। একজন ২৪ ঘণ্টার সহায়ক থাকলে সুবিধা হত বলে জানান। পাল্টা এসএসকেএমের চিকিৎসকরা প্রাক্তন মন্ত্রীকে ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন।
কী সিদ্ধান্ত জেল কর্তৃপক্ষের?
এসএসকেএমের চিকিৎসকদের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ২৪ ঘণ্টা সহায়কের আবেদন খারিজ করে দেন। কিন্ত ব্যায়ামের সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে একজন সহকারী থাকবে বলে জানিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছর ২৩ জুলাই তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব ও রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। একইসঙ্গে ধরা হয় পার্থর 'বান্ধবী' অপ্রিতা মুখোপাধ্যায়কেও। সামনে আসে ৫০ কোটি নগদ আর প্রচুর মূল্যের অলঙ্কারের ছবি! যা গোটা দেশে চাঞ্চল্য় ফেলেছিল। এর প্রায় পাঁচ দিনের মাথায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। তখন থেকেই তিনি জেলবন্দি। এরপর থেকে একাধিকবার নিজের শারীরিক অবস্থার অবনতির দোহাই দিয়ে জামিনের আর্জি জানিয়েছেন প্রার্থ। কিন্তু প্রতিবারই তা খারিজ হয়ে যায়।