'বান্ধবী' অর্পিতাকে রাজনীতিতে আনতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কীভাবে বাস্তবায়িত হবে পরিকল্পনা? নিজের প্রভাব খাটিয়ে বিরাট ছক কষেছিলেন মমতা মন্ত্রিসভার একদা 'সেকেন্ড ইন কমান্ড'। কিন্তু পরিকল্পনা এগোতেই সব ছারখার! কেন? তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় আসল কাহিনী। জানা গিয়েছে, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অতি তৎপরতাতেই নাকি 'বান্ধবী'কে পুরসভার প্রার্থী করতে পারেননি পার্থ।
অর্পিতার জন্য পার্থর উদ্যোগ
বহু টালবাহানার পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলার শতাধিক পুরসভায় ভোট হয়েছিল। তৃণমূল সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি পুরসভার ২২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলের ভিতর এ নিয়ে সব উদ্যোগ প্রায় পাকাও করে ফেলেছিলেন তিনি। এমনকী পুরসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য কামারাহাটি এলাকার ভোটার পর্যন্ত হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 'বান্ধবী'।
জ্যোতিপ্রিয় কলকাঠি
উত্তর ২৪ পরগনাতেই নিজের রাজনৈতিক জীবনের সিংহভাগ কর্মকাণ্ড জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। দীর্ঘদিন ওই জেলায় তৃণমূলের জেলা সভাপতিও ছিলেন তিনি। ২০২২ সালে অবশ্য ওই পদে ছিলেন না তিনি। কিন্তু, জেলার রাজনীতিতে মোটের উপর তাঁর প্রভাব ছিল। আর পার্থর পরিকল্পনা ভাঙতে সেই সুযোগকেই কাজে লাগান বালু (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ডাক নাম)।
জানা যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার বিষয়টি জানতে পেরেই জ্যোতিপ্রিয় কামারহাটি পুরসভা এলাকার কর্মী, স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেন। পার্থর 'বান্ধবী'কে নিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়েই তাঁর প্রার্থী হওয়া ঠাঁকাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন বালু। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে 'বহিরাগত' বলে দেগে দিয়েছিলেন কামারহাটির নেতারা। ভিতরের খবর ছিল, অর্পিতাকে জোর করে দাঁড় করানো হলে নির্দলকে দাঁড় করানো হবে। এই খবরটাই দলের হাই-কমান্ডের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়।
জ্যোতির হাসি
এরপরই কামারহাটির তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা বেরতেই দেখা যায় পার্থর অর্পিতা সুযোগ পাননি। সফল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চাল।
বালুর বুলি
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ-অর্পিতা গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি। তাঁদের গ্রেফতারের পরই দলের মধ্যে বিরাট স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। দাবি করেন, দলকে বড় বিপর্যয়ের মুখ থেকে তিনিই বাঁচিয়েছিলেন। মন্ত্রী পার্থের সঙ্গে যদি দলের কাউন্সিলরও ধরা হত তা হলে বিষয়টা আরও অস্বস্তির হল তৃণমূলের কাছে।