বছর কয়েক আগেও উৎসবের দিনগুলোয় তাঁর পোশাক, আড়ম্বর ছিল স্টাইল স্টেটমেন্ট। তাঁর নামেই রমরম করে চলত দক্ষিণ কলকাতার এক পুজো। এহেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই গত দু'টি পুজো কাটিয়ে ফেললেন জেলের অন্দরে। নিঃসঙ্গভাবে সেলের মধ্যে। সংশোধনাগারে দুর্গা পুজো হয়। এবার পুজোর পাঁচদিন জেলের ভিতকে কী করলেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম 'মাস্টার-মাইন্ড'?
এবারও প্রেসিডেন্সি জেলে দুর্গা পুজো হয়েছে। বন্দিরা সেই দুর্গাপুজোতে অংশ নেন। কিন্তু সেখানে যাননি তৃণমূলের অপসারিত মহাসচিব পার্থ। কারারক্ষীদের সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে, সেলের মধ্যেই পুজোর পাঁচদিন কাটিয়ে দিয়েছেন পার্থ। যেন কিছুটা অভিমানে দুর্গা পুজোর ক'দিন আর যেন সেলের বাইরেই বেরোতে দেখা যায়নি তাঁকে।
আরও পড়ুন- ইডি হেফাজতে জ্যোতিপ্রিয়, আদালতের নির্দেশ শুনেই জ্ঞান হারালেন মন্ত্রী!
কিন্তু, মোটেও চুপচাপ ছিলেন না রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক কারারক্ষীর কথায়, এখন প্রায়ই চিৎকার করে কান্নাকাটি জুড়ে দেন পার্থবাবু। শুধু কাঁদতে কাঁদতে থাকেন আর বলেন ওনার জেলে থাকতে আর ভাল লাগছে না। কেন ভাল লাগছে না? কারারক্ষীদের কাছে পার্থ নাকি বলেছেন, 'এভাবে চলতে পারে না। এই চার দেওয়ালের মধ্যে আর ভাল লাগছে না।'
এসএসসি নিয়োদ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে কারাবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অসুস্থতার কারণ দর্শিয়ে একাধিকবার জামিনের আবেদন করলেও তা নাকচ হয়েছে। 'বান্ধবী' অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর দেখা হয় না। এই মামলায় ধৃত বাকি অভিযুক্তদেরও দূরের সেলে রাখা হয়েছে। ফলে তাঁদের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেখাদেখি বা কথা বলার কোনও সুযোগ নেই। জেলের খাবার-দাবারেও তীব্র অরুচি তাঁর। গোদের উপর বিষ ফোড়ার মতই আবার জেলের অন্দরে নানা সময়ে পার্থকে 'মোটকা দা', 'কি রে চাকরি দিবি'র মত কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। এমনকী জলের মগ ছুঁড়েও মারা হয়েছে একদা 'হাইপ্রোফাইল' পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এ পরিবেশ তীব্র অসহ্য হয়ে উঠেছে তাঁর কাছে। এবার তাই কাঁদা ছাড়া আর কোনও উপায় দেখছেন না নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়।