Advertisment

কীভাবে অর্থ তছরুপ 'অপা'র? চার্জশিটে চমকে দেওয়া তথ্য ED-র

সবমিলিয়ে 'অপা'র ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি৷

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Partha Chatterjee set up dummy firms errand boy was director of one says ed

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।

এসএসসি নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে বিশেষ সিবিআই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি৷ সবমিলিয়ে 'অপা'র ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি৷ চার্জশিটে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে যে, আর্থিক তছরুপের জন্য পার্থ ও অর্পিতা একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খুলেছিলেন। প্রভাব খাটিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী এইসব কোম্পানির ডিরেক্টর করেছিলেন তাঁর বা অর্পিতার স্বল্প বেতনভোগী কর্মচারীকে।

Advertisment

তদন্তে এখনও মেলা তথ্য অনুসারে আর্থিক তছরুপের জন্য পার্থ ও অর্পিতা ৬টি ভুয়ো কোম্পানি খুলেছিলেন। চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা সম্পর্কে ইডি বলেছে যে, তিনি কমপক্ষে ৬টি ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করেছিলেন এবং 'কলঙ্কিত তহবিল তছরুপের লক্ষ্যে' ওই কোম্পানিগুলিতে ভুয়ো ডিরেক্টর-ও নিয়োগ করেছিলেন।

চার্জশিটে ইডি-র উল্লেখ, 'নানা উপায়ে সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের শোষণ করা হয়েছিল এবং শ্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দ্বারা ভুয়ো কোম্পানিগুলিতে তাঁদের ডিরেক্টর করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে একজনেরও সম্মতি বা নেওয়া হয়নি। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নথির কোনও বিষয়বস্তু না দেখিয়েই কোম্পানির কাগজপত্রে স্বাক্ষর করানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে বেতভোগী কর্মচারীরা যাতে বেঁকে না বসেন তার জন্য প্রাক্তন মন্ত্রী নিজের প্রভাব এবং ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলেন।'

তদন্তে উঠে এসেছে যে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাজের একজন ব্যক্তিকে ভুয়ো কোম্পানি মেসার্স সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টরদের করা হয়েছিল। এই ভুয়ো কোম্পানি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। এই বিষয়টি ইডি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে।

এছাড়াও উল্লেখ রয়েছে যে, মেসার্স সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের দ্বিতীয় ডিরেক্টর শ্রী কল্যাণ ধর একজন নগণ্য ব্যক্তি এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায় থেকে মাসে ১৮ হাজার টাকা করে বেতন পেতেন। কল্যাণ ধর তার বিবৃতিতেজানিয়েছেন যে, ওই কোম্পানিতে ডিরেক্টার করার বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়নি। ফলে তা নিয়ে কোনও ধারণাও নেই। তিনি কেবল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে নথিতে স্বাক্ষর করতেন।

ইডির দাবি, অর্পিতা এবং অন্যান্যদের জেরায় প্রামাণ মিলেছে যে, বকলমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই সব ভুয়ো কোম্পানিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন। এইসব কোম্পানিগুলির অ্যাকাউন্টে এসএসসি কেলেঙ্কারি অর্থ জমা করতেন এবং পরবর্তীতে তা দিয়ে স্থাবর সম্পত্তি কিনেছিলেন।

চার্জশিটে পার্থকে ও সহ-অভিযুক্ত অর্পিতাকে 'অপরাধমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে তৈরি তহবিল তছরুপের ঘনিষ্ঠ সহযোগী' বলে অভিহিত করে, ইডি বলেছে, 'তদন্তে প্রকাশ যে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে বাজেয়াপ্ত নগদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। মিসেস অর্পিতা মুখোপাধ্যায় তার ৪ঠা অগাস্টের বয়ানে স্পষ্টভাবে তা জানিয়েছেন। এমনকি তিনি তদন্তকারীদের কাছে এ বিষয়ে সত্য প্রকাশের জন্য একটি আবেদনও করেছিলেন।'

তদন্তে প্রকাশ,পার্থ এবং অর্পিতা যৌথভাবে সম্পত্তি কিনেছিলেন এবং মেসার্স এপিএ ইউটিলিটি সার্ভিসেস স্থাপন করেছেন। এটি একটি 'অংশীদারি সংস্থা'। যা ২০১১ সালে নথিভুক্ত। ইডি বলেছে, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপরাধমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে বিপুল নগদ অর্জন করেছেন এবং সেটি গোপন করেছেন। ওই অর্থের এনেকটাই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে দুটি ফ্ল্যাট থেকে ৪৯,৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।'

পার্থ এবং অর্পিতার "ঘনিষ্ঠ মেলামেশা"তে, ইডি তার নামে ৩১ এলআইসি বীমা নির্দেশ করেছে - "মার্চ ২০১২ সালে খোলা" যার কিস্তিপার্থ চট্টোপাধ্যায় দিতেন।

ইডির দাবি, অর্পিতা ৪ঠা অগাস্ট বিবৃতিতে 'স্বীকার করেছিলেন যে তাঁর বাড়িতে লুকানো বিপুল নগদ পার্থ চট্টোপাধ্যেয়র মালিকানাধীন। বাজেয়াপ্ত বিপুল টাকার উৎস তাই প্রাক্তন মন্ত্রীই শুধু দিতে পারবেন।' সংস্থা বলেছে যে তিনি 'অর্পিতা অপরাধের সঙ্গে যক্ত। অন্যান্য অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং সংস্থার সহায়তায় অপরাধের অর্থ ব্যবহার, দখল এবং গোপন করেছেন তিনি।'

partha chatterjee Enforcement Directorate WB SSC Scam Arpita Mukherjee
Advertisment