এবার উলটপুরাণ। এতদিন তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের অপ্রত্যাশিত আয়বৃদ্ধির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। এবার বিরোধী নেতৃত্বের অপ্রত্যাশিত আয়বৃদ্ধির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হল। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা দায়ের করেছেন জনৈক সুজিত গুপ্ত। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বৃহস্পতিবার এই মামলা দায়েরের পরই রাজ্যজুড়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। অনেকেই কটাক্ষের সুরে বলছেন, এটা আসলে ১৯-এর পালটা ১৭। কারণ, কয়েকদিন আগেই তৃণমূলের ১৯ নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলা দায়ের হয়েছে। আর, তা নিয়ে ব্যাপক শোরগোলের মধ্যেই বৃহস্পতিবার বিরোধীদের মোট ১৭ জন নেতার বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ দায়ের হল। যাঁদের মধ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশিই রয়েছেন একাধিক সাংসদ ও বিধায়করাও।
দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের নিশানায় রয়েছে কাঁথির অধিকারী পরিবার। সেই পরিবারের তিন সদস্য রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর নাম রয়েছে এই মামলায়। তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্য বিজেপির পরিচিত মুখ দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খাঁ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, মিহির গোস্বামী, অগ্নিমিত্রা পাল, শমীক ভট্টাচার্য, শীলভদ্র দত্ত, বিশ্বজিৎ ওরফে রাহুল সিনহা, অনুপম হাজরা, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, মনোজ ওঁরাও। তালিকায় বামেদের মধ্যে নাম রয়েছে মহম্মদ সেলিম ও তন্ময় ভট্টাচার্যের। কংগ্রেসের মধ্যে অভিযুক্তের তালিকায় নাম রয়েছে আবদুল মান্নানের।
আরও পড়ুন- ভেঙে গেল জঙ্গি সংগঠন কেএলও, রাজ্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ দ্বিতীয় শীর্ষ নেতার
আদালতে দায়ের করা হলফনামায় মামলাকারী দাবি করেছেন, ২০০৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর অস্থাবর সম্পত্তি ৮৫৪ শতাংশ ও স্থাবর সম্পত্তি ১২৮ শতাংশ বেড়েছে। তাঁর ভাই তথা সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩৪৩ শতাংশ। স্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। তাঁদের বাবা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর অস্থাবর সম্পত্তি ২০০৬-২০১৯, এই ১৩ বছরে বেড়েছে ৩,৫৬৮ শতাংশ। স্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৬,২১৩ শতাংশ।
ওই একই সময়ে শিশির অধিকারীর স্ত্রী অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ১,৭৩৮ শতাংশ। আর, স্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩০০ শতাংশ। দিলীপ ঘোষের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩,৭১১ শতাংশ। আর, জিতেন্দ্র তিওয়ারির বেড়েছে ৫,৮২৩ শতাংশ। মামলাকারী এই সব অপ্রত্যাশিত সম্পত্তি বৃদ্ধির প্রকৃত উৎস সন্ধানে তদন্তের নির্দেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।