বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
"আমার বিরুদ্ধে খবর করুন, কোনও সমস্যা নেই। আমার আপত্তি নেই, কিন্তু মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না। এত বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি থাকছে না। বদনাম হচ্ছে বাংলার সরকারের।" বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টকে নব মহাকরণের দফতর হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে এসে প্রধান বিচারপতি-সহ সমস্ত বিচারপতি এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisment
মঞ্চে তখন বসে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব, সহ বরিষ্ঠ বিচারপতি, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকরা। অতিথি আসনে আরও অনেক বিচারপতিদের মধ্যে বসে তখন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যাঁর একের পর এক নির্দেশে রাজ্য সরকারের মুখ পুড়েছে। এদিন হাইকোর্টের কাজকর্মের জন্য সম্প্রসারিত এই বি-ব্লকের এক থেকে দশ তলা পর্যন্ত ভবন রাজ্য সরকারের তরফে প্রদান করা হয়। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের হাতে চাবি তুলে দেন মুখ্যসচিব।
তার পর বলতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন বলেন, "জাজদের অনেক সমস্যা হচ্ছিল। আমাদের কাছে ভবনের জন্য আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতিরা। আমরা বললাম, ঠিক আছে জায়গার বন্দোবস্ত করে দেব। জাজরা কাজের জন্য ঘর পাবেন না এটা তো উচিত নয়। হাইকোর্টে অনেক মানুষ আসেন রোজ বিচারের জন্য। এটা গণতন্ত্রের স্তম্ভ। বিচার এক পক্ষ হয় না, নিরপেক্ষ হয়। মানুষ যখন সব জায়গা থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে তখন বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা রাখে। বিচারব্যবস্থা, সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের এক একটা স্তম্ভ। একটা ব্যর্থ হলে আরেকটাও ব্যর্থ হয়। তাই আমরা জায়গা দিতে পেরে গর্বিত। আরও প্রয়োজন হলে সহায়তা করব।"
তার পর তিনি বলেন, "কলকাতা হাইকোর্ট অনেক প্রাচীন, অনেক গৌরবের স্থান। ভূ-ভারতে এর সমতূল্য কমই আছে। আমি তাই সমস্ত বিচারপতিদের কাছে আমার সুযোগ দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমিও কিন্তু আইনজীবী, আমিও বার কাউন্সিলের সদস্য। যেকোনও দিন আমি আদালতে কেসের জন্য আসতে পারি। আমি সদস্য চাঁদা দিই। শুধু একটাই অনুরোধ আপনাদের কাছে, অনেক মামলা তিন-চার বছর ধরে বিচারাধীন, সেগুলি নিষ্পত্তি করুন। আরও অনেক মহিলা বিচারপতি দিন আমাদের। আমি জানি আপনাদের হাতে নেই সেটা। তবু চেষ্টা করুন।"
এর পরই মমতা বলেন, "দয়া করে মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না। স্যর, এটা মাঝে মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ায়, ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এটাই বিচারব্যবস্থা যা আগে প্রমাণের উপর করে মামলা নেয়। তেমনই সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের কাছেও আমার আবেদন, দয়া করে মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না। আমার বিনীত অনুরোধ। ভুল খবরে সম্মানহানি হয়। সত্যি খবর করুন। আমার বিরুদ্ধে খবর করুন, কোনও সমস্যা নেই। আমার আপত্তি নেই, কিন্তু মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না।"