সুপারি কিলার দিয়ে খুনের ছক মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের ডাক সাইডের তৃণমূল নেতাকে। এমনই অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এবং পুলিশ সুপারের কাছে দায়ের হতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে মালদায়। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হতে জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সমালোচনার ঝড়। যদিও এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাচোল মহাকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতাননগর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল খান ওরফে বুলবুল খান। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন । বর্তমানে তিনি মালদা জেলা পরিষদের হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার নির্বাচিত সদস্য পদে রয়েছেন।
এছাড়াও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন বুলবুল খান। তিনি পুলিশকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন বিহারের দাগি অপরাধীদের দল তাকে খুন করার জন্য ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে। এমনকি শার্প শুটার পাঠিয়ে বাড়ির সামনে রেকি করা হচ্ছে। তাঁকে খুনের জন্য বিহারের কিছু মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল চক্রান্ত করছে। ভাড়া করা হয়েছে শার্প শুটার।সুলতাননগরে বাড়ির সামনে পাঠানো হয়েছে রেকি করতে। কিছু সূত্রের মাধ্যমে তিনি সেটা জানতে পেরেছেন। তারপরে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।পাশাপাশি ই-মেইল মারফত জানিয়েছেন মালদার পুলিশ সুপারকে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যদি অভিযোগ সত্যি হয়। তবে দাপুটে এই নেতাকে কারা খুনের চক্রান্ত করছে। কেনই বা চক্রান্ত করছে। তবে এর পেছনে দলের একাংশের যোগের কথা তিনি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেন নি। চলতি বছরের শুরুতেই মালদা শহরে খুন হয়ে ছিলেন তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা দাপুটে নেতা বাবরা সরকার।সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে ইংরেজবাজার শহর তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি।হরিশ্চন্দ্রপুরেও মন্ত্রী তাজমুলের সঙ্গে বর্তমান সময়ে বারবার বুলবুল খানের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনাগুলোকে হাতিয়ার করেই বিরোধীদের অভিযোগ এটা টিকিট নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
যদিও বুলবুল খান বলেন,এই চক্রান্ত নিয়ে ভয় পেতে নারাজ।পুলিশের উপর এখনো তিনি ভরসা রাখছেন।তবে পরিবার আতঙ্কে রয়েছে সেই কথাও জানিয়েছেন।
দক্ষিণ মালদা জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ী বলেন, মালদা জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী মানলো আমরা প্রথম থেকেই দেখতে পাচ্ছি সরকারি আসার সময় থেকে। সেটা বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় গিয়েছে যে একজন নেতা আরেকজন নেতাকে খুন করার জন্য বাইরে থেকে শুটার ভাড়া করছে। বছরের শুরুতেই আমরা দেখলাম বাবলা সরকারের খুন। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতেই পারে। আমরা এখানে দেখলাম বিভিন্ন মিটিং মিছিলে বুলবুল খানের সঙ্গে মন্ত্রী তাজমুল হোসেন প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কোনো বিষয় এখানে জড়িত নয়। তাদের দাবি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাইরে থেকে দুষ্কৃতী ভাড়া করে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করার চেষ্টা করছে বিজেপি।