PM Modi in Siliguri Rally Today: পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলনে উত্তরবঙ্গে বসবাসকারী গোর্খাদের একাংশ। শিলিগুড়ির কাওয়াখালির মঞ্চ থেকে ভোটের মুখে সেই ইস্যু আরেকবার নাড়া দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শিলিগুড়িতে বিজেপির সভায় মোদীর মুখে উঠে এল গোর্খা সমস্যার কথা।
শনিবার শিলিগুড়ির জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'আমদের গোর্খা ভাই বোনের যে সমস্যা রয়েছে, ওদের প্রতি বিজেপি সবসময় সংবেদনশীল। বিজেপি আপনাদের চিন্তা দূর করতে নিরন্তর চেষ্টা করেছে। আমরা এখন সমাধানের কাছাকাছি আছি। বিজেপি আপনার অপেক্ষা দূর করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে।' তাহলে কি আগামিতে গোর্খাদের পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের দাবিতেই কেন্দ্র সিলমোহর দিচ্ছে? প্রশ্নটা উস্কে দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রীই।
গত লোকভা ভোট উত্তরবঙ্গের সবকটি আসনই গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। এবারও সেদিকেই গেরুয়া শিবিরের নজর। যা বিবেচনা করে মোদী বললেন, 'উত্তরবঙ্গের বিকাশের জন্য বিজেপির নির্দিষ্ট রুট ম্যাপ রয়েছে। এখানে পর্যটন এগিয়ে নিয়ে যাব। চা শ্রমিকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ডফসল বিমা যোজনা সহ বিভিন্ন সুবিধা দেব। চা শ্রমিকদের টাকা যাতে সোজা তাঁদের ব্যাহ্কে চলে যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। কাঠের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছি। জরুরি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- TMC Jana Garjana Sabha: ব্রিগেডে মঞ্চ-চমক তৃণমূলের, ম্যাপ-মাইক হাতে পরখ ‘সেনাপতি’ অভিষেকের
ভাষণের শুরুতেই এদিন মোদী বললেন, 'আমার প্রিয় মা, ভাই, বোন, দাদা, দিদিদের সাদর নমস্কার জানাই।' একইসঙ্গে মোদী বলেন, টচা বাগানে কর্মরত সকল শ্রমিক, তাঁদের পরিবারকে এই চাওয়ালার প্রণাম। আমি যখনই উত্তরবঙ্গে এসেছি আশীর্বাদ পেয়েছি। বিশেষ করে আমাদের মা, বোন, মেয়েরা যে স্নেহ পাই বলার নয়। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহের অনেক সাথী এখানে এসেছেন। নিজের পরিবারের লোকের মাঝে এসে খুব ভাল লাগছে।'
জমি দখল থেকে দুর্নীতি, সন্দেশখালি- শিলিগুড়ির সভাতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী। শাসক দলকে 'ভ্রষ্ট' বলে কটাক্ষ করেন তিনি। বললেন, 'বাংলায় ভ্রষ্ট তৃণমূল সরকার মহিলা বিরোধী সরকার দলিত, আদিবাসী, ওবিসির রেশন যোজনাতেই ঘোটালা করেছে। এদের নেতা মন্ত্রী রেশন দুর্নীতিতে জেলে। মোদী তাঁর গরিব পরিবারগুলিকে রেশনের সঙ্গে সঙ্গে বিনা খরচে চিকিৎসার গ্যারান্টিও দিয়েছে। কিন্তু ভ্রষ্ট গরিব বিরোধী তৃণমূল সরকার এখানে আয়ুষ্মান যোজনা বলবৎ করছে না। তৃণমূল সরকার আপনাদের পদে পদে লুটছে। এখানকার তৃণমূল সরকার নিজেদের তোলাবাজদের সুবিধা দিতে ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড বানিয়ে দিয়ে দিয়েছে। মোদী গরিবের ঘরের জন্য টাকা পাঠায়, তৃণমূল সরকার তোলাবাজদের পছন্দ করা লোককে টাকা দিয়ে দেয়। আপনাদের কষ্ট নিয়ে তৃণমূলের কিছু আসে যায় না।'
উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়েও মোদীর মুখে ফের উটে এসেছে সন্দেশকালি প্রসঙ্গ। মমতা সরকারকে নারী বিদ্বেষী বলে তোপ দেগে বলেছেন, 'সন্দেশখালিতে গরিব দলিত, আদিবাসী বোনেদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতারা কী কী করেছে তার চর্চা আজ গোটা দেশে হচ্ছে। মহিলাদের উপর অত্যাচার, গরিবদের রোজগার লুট করা তৃণমূলের তোলাবাজদের কাজ।'
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, 'উত্তরবঙ্গের সঙ্গে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামের ইন্ডি গঠবন্ধন খুবই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে। বিকাশ থেকে বঞ্চিত রাখার পাশাপাশি সমাজের ভিতরেও ক্ষয় তৈরি করেছে। মোদীর মুখে গোর্খার উৎসাহ, রাজবংশী সাহস, আদিবাসীর দৃঢ়তা এবং প্রত্যেক বাঙালির ক্ষমতার কথাও শোনা গিয়েছে। বিজেপি শান্তি সৌহার্দ্যের সঙ্গে প্রত্যেক স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই তো এত বছরের অপেক্ষার পর অযোধ্যায় রামমন্দিরের নির্মাণ হয়েছে। জম্মু কাশ্মীর থেকে আর্টিকাল ৩৭০ সরানো হয়েছে, বলেন মোদী।'