একজনের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে অন্যজনকে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে এমনই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধে। এনিয়ে প্রকৃত উপভোক্তা বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুরারই ১ নম্বর ব্লকের বিডিও।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মুরারই ১ নম্বর ব্লকের মুরারই গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাদিশ্বর গ্রামের পাঠান পাড়ায়। ওই পাড়ার বাসিন্দা পেশায় বাসচালক বশির শেখের নামে ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি প্রাপকের তালিকায় নাম নথিভুক্ত হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্য খায়রুল বাশার পাশের মাত্রাপাড়ার বাসিন্দা বাসির শেখকে ওই বাড়ির টাকা পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরে বছর দুয়েক আগে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন বশির শেখ। প্রধান তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন তার প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে।
দিনের পর দিন পঞ্চায়েতের দরজায় দরজায় ঘুরেও সেই প্রাপ্য টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে মুরারই ১ নম্বর ব্লকের বিডিও-র দ্বারস্থ হন। বিষয়টি লিখিতভাবে বিডিওকে জানান বশির। অভিযোগ, তাঁর নামে আসা টাকা বাড়ি না বানিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য এবং ভুয়ো উপভোক্তা নিজেরা ভাগ করে নিয়েছেন। বসির বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্য পরিকল্পনা করে আমার নামের সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে এমন বাসির শেখকে টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। অথচ আমাদের বাবার নামের সঙ্গে বাসিররের বাবার নামের কোনও মিল নেই। ওই টাকা বাড়ি নির্মাণ না করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু দু’বছর ধরে শুধু আশ্বাসই পেলাম। আমার প্রাপ্য টাকা পেলাম না। পেলাম না গীতাঞ্জলী প্রকল্পের বাড়ি। তাই বাধ্য হয়ে বিডিও-র দ্বারস্থ হলাম”।
আরও পড়ুন শান্তিকুঞ্জের ‘শান্তি’ দেখবে পুলিশ, শুভেন্দুর গড়ে অভিষেকের সভা নিয়ে কী নির্দেশ কোর্টের?
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য খায়রুল বাশার। তিনি বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শুধুমাত্র বাবার নামের গণ্ডগোলে এরকম হয়েছে। আমার কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নেই। তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে যে সাজা দেবে তা মাথা পেতে নেব”। বিডিও প্রণব চট্টরাজ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে দুর্নীতি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অরিন দত্ত বলেন, “শুধু একটা নয়, এরকম দুর্নীতি ভুরি ভুরি হয়েছে। সেই কারনেই কেন্দ্র সরকার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। পুর্ণাঙ্গ তদন্ত হলে তৃণমূলের বহু রথী-মহারথী জেলে যাবে”। তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, “আমারও দলীয়ভাবে তদন্ত করে দেখব। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এরকম অভিযোগ তুলে বিরোধীরা আমাদের কালিমালিপ্ত করতে পারে”।