গত বৃহস্পতিবার যাদবপুরের পড়ুয়ার দেহ উদ্ধা হয়। তারপর থেকে একাধিক প্রশ্নে তোলপাড় রাজ্য। মৃত ছাত্রের পরিবারের কাঠগড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের হস্টেলের আবাসিকরা। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই তিন জল পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে। যাঁরা বুধবারের পর থেকে হস্টেল ছেড়েছেন, তাঁদের সম্বন্ধে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। কেন তাঁরা হস্টেল ছেড়েছেন? ছাত্র মৃত্যুর সঙ্গে এই হস্টেল ছাড়ার কোনও যোগ আছে কিনা সেটাই জানতে মরিয়া পুলিশ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ছাত্রের মৃত্যুও সেই কারণেই বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার দুপুরে যাদবপুরের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর কথাতেইতা স্পষ্ট।
বুধবার রাতের ঘটনার পর যাদবপুরের হস্টেলের অব্যবস্থার একাধিক খবর সামনে আসছে। অভিযোগ উঠছে যে, হস্টেলের বেশিরভাগ ঘরই প্রাক্তনীদের দখলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা ঘর ছাড়েন না। হস্টেলে তাঁদেরই দাপট চলে। সিসি ক্যামেরা না থাকায় অবাধে চলে বেআইনি কাজ। নতুন ছাত্রেরা হস্টেলে এলে অন্য ছাত্রের অতিথি হিসাবে তাঁদের থাকতে হয়।
ফলে যাদবপুরের হস্টেলে থাকতে ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। পুলিশের অনুমান, বিতর্ক এড়াতে অনেকেই হস্টেল ছেড়েছেন। যদিও আবাসিক প্রত্যেকেই পুলিশের আতশকাচের নীচে। হস্তক্ষেপ করেছে ইউজিসি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইউজিসি-র প্রতিনিধি দল আগামী বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন।
ছাত্রের মৃত্যুর পর হস্টেলে তাঁর ঘর থেকে একটি ডায়েরি মিলেছে। তাতে বিভাগীয় সিনিয়রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ডিন অফ স্টুডেন্টস'কে লেখা একটি চিঠি পাওয়া যায়। সেই চিঠি ঘিরে নতুন রহস্য দানা বেঁধেছে। চিঠিতে 'রুদ্র দা' নাম করে 'ভয় দেখানোর' চেষ্টা-র অভিযোগ করা হয়েছে। তবে চিঠি-তে উল্লেখিত তারিখ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর তদন্তে এখনও পর্যন্ত যে তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাঁরাই কি এই চিঠি লিখিয়েছিলেন? নাকি এই চিঠি লেখা বা লেখানোর নেপথ্যে অন্যদের হাত রয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে সে সব খতিয়ে দেখছে পুলিশ।