Advertisment

ফের উত্তপ্ত করুণাময়ী, টেনে-হিঁচড়ে বাম-বিক্ষোভ তুলল পুলিশ, ভয় পেয়েছে, খোঁচা মীনাক্ষী'র!

সিপিএমের ছাত্র যুব সংগঠনের বেশ কয়েকজনকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tet, karunamoyee, sfi, dyfi

রণক্ষেত্র করুনাময়ী। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ

নিয়োগ চেয়ে টানা চারদিন পথেই পড়েছিলেন ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। তবে নিয়োগ তো দূর অস্ত, চাকরির আশ্বাস পর্যন্ত মেলেনি। উল্টে গতরাতে হঠাৎ পুলিশি তৎপরতায় বাধ্য হয়েই আন্দোলস্থল ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। অনেককে পুলিশ গ্রেফতার পর্যন্ত করেছে। আজ সকাল থেকেই পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ করুণাময়ী চত্ত্বর।

Advertisment

আজ সকালেই বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের সঙ্গে পুলিশের বচসায় ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। টেনে-হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়, বাম ছাত্র-যুব কর্মী সমর্থকদের। পাশাপাশি সাধারণ মানুষদেরও হেনস্থার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের দাবি, "পুলিশ এই আন্দোলন দেখে ভয় পেয়েছে"। বিক্ষোভ ঘিরে হুলস্থূল করুনাময়ী এলাকা। বাম ছাত্র সংগঠনের আরও অভিযোগ, "রাতের অন্ধকারে মহিলাদের ওপর নির্মম অত্যাচার করেছে পুলিশ। পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ না থাকায় পুরুষ কর্মীরাই মহিলাদের ধরপাকড় করে"।

গতরাতে করুণাময়ীর বিক্ষোভস্থল থেকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে বিধাননগর পূর্ব, দক্ষিণ ও উত্তর থানায় নিয়ে যাওয়া আন্দোলনকারীদের। অনেককে আবার নিউটাউন থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফর্মালিটি মেইন্টেন করার পর বিধাননগর পূর্ব থানা রাত ২টো নাগাদ কয়েকজনকে বের করে শিয়ালদহে পৌঁছে দেয়। মহিলা পুলিশরাও অভদ্র আচরণ করেছে। রাস্তায় শুয়ে বসে নিজেদের প্রতিবাদ আন্দোলন জাহির রাখেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে আজ সকালেই সিপিএমের ছাত্র যুব সংগঠনের তরফে করুণাময়ীতে গেলে তাদের বাঁধা দেয় পুলিশ। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজপথ।

publive-image
বেশ কয়েকজনকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ

বেশ কয়েকজনকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এর মধ্যেই এসএফআইয়ের তরফে অভিযোগ, " পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাজ্যে হিটলারি শাসন চলছে"। এদিকে এই ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় করুনাময়ী অঞ্চলে। সিপিএমের ছাত্র যুব সংগঠনে সঙ্গে পুলিশের কার্যত ধস্তাধস্তি শুরু হয়। প্রতিবাদ কর্মসূচীকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় করুণাময়ী।

গত সোমবার দুপুর থেকে আন্দোলনের শুরু। হঠাৎ সল্টলেকের করুণাময়ী মোড় চত্বরে শ’য়ে-শ’য়ে তরুণ-তরুণীর দল ভিড় বাড়াতে শুরু করে। পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে জড়ো হয়ে যান হাজারখানেক বিক্ষোভকারী। মুহূর্তে জনপ্লাবন নেমে আসে করুণাময়ী মোড়ে।

করুণাময়ীতেই রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিস। আন্দোলনকারীরা সেই অফিসের সামনেই রাস্তায় বসে পড়েন। শুরু হয় স্লোগানিং। ‘চাকরি চাই’, এই স্লোগানে ঝড় ওঠে করুণাময়ী মোড়ে। পুলিশ বারবার আন্দোলনকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে এতে কোনও ফল হয়নি। বরং সময় যত এগিয়েছে ততই পোক্ত হয়েছে আন্দোলন।

publive-image
রাস্তায় বসে অবস্থান বিক্ষোভে চাকরিপ্রার্থীরা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ

এরই মধ্যে টেট আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করতে শুরু করেন বেশ কিছু শিক্ষক। তাঁরাও আন্দোলকারীদের পক্ষে রয়েছেন বলে জানান। চোয়াল শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে চাকরির জন্য লড়াইয়ের স্বর আরও চড়া করেন বিক্ষোভকারীরা। অনেক বিক্ষোভকারীই নিজের বাচ্চাদেরও নিয়ে যান আন্দোলনস্থলে। বাচ্চা কোলেই তাঁদের প্রতিবাদ জারি রাখতে দেখা গিয়েছে।

গত চার দিনে বিরোধী প্রায় সব দলের নেতারাই পৌঁছে গিয়েছিলেন করুণাময়ীতে। টেট আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। তবে টানা এই আন্দোলনের জেরে সমস্যা বাড়ছিল। করুণাময়ীতে চাকরির জন্য চলা এই ধর্নার জেরে পাশে থাকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কর্মীদের কাজে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করায় পুলিশকে ছাড়পত্র দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরেই বাড়ে পুলিশি তৎপরতা। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে মাইকিং করে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলে পুলিশ। শেষমেশ মাঝরাতে শুরু হয় পুলিশি অপারেশন। গভীর রাতে আন্দোলকারীদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দিতে শুরু করে পুলিশ। অল্প সময়ের মধ্যেই গোটা করুণাময়ীর আন্দোলস্থল ফাঁকা করে দেয় পুলিশ।

kolkata news TET Primary TET
Advertisment