গত এক বছর ধরে মধ্যরাতে একের পর এক বাইক এবং গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘিরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায়। অবশেষে ইস্পাতনগরীর এই রহস্যের কিনারা করে দু'জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম গৌরাঙ্গ পাল এবং তারক কর্মকার। তবে কেন মধ্যরাতে গাড়ি এবং বাইকে আগুন লাগানো হত, সেই কারণ এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। ধৃতদের দুর্গাপুর আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশের তরফে ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, আদালতের কাছে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানাবেন তাঁরা।
ঠিক কী ঘটেছিল?
এক বছর ধরেই নিশাচর দুষ্কৃতীদের দাপটে গাড়ি, বাইক পোড়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিল দুর্গাপুরবাসী। ফের সেই স্মৃতিকে সামনে আনে সাম্প্রতিক এমনই একটি ঘটনা। ইস্পাতনগরীর এডিসন এলাকায় পরপর দুটি বাড়ীতে দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে ঢুকে তিনটি বাইক এবং একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আতঙ্কিত বাড়ির মালিকেরা জানায় যে রাত দুটো-আড়াইটা নাগাদ ঘরের বাইরে থেকে কিছু আওয়াজ পেয়ে তাঁরা বাইরে বেড়িয়ে দেখেন, দাউদাউ করে জ্বলছে গাড়ি। কিন্তু, কেন বাড়িতে ঢুকেই গ্যারেজে থাকা বাইক কিংবা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা? কীভাবে অগ্নিসংযোগ করা হল, এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও নেই।
মধ্যরাতে এভাবেই জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। ছবি- অনির্বাণ কর্মকার
এই ঘটনার পর পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে অভিযোগও তোলেন এলাকাবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এক বছর কেটে গেলেও পুলিশ এই ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি। যদিও পুলিশের তরফে জানানো হয় যে তদন্ত চলছে। তাঁদের অনুমান, কোনও একটি দল পরিকল্পনা মাফিক বিশেষ উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটাচ্ছে।
গত এক বছর ধরে এমন ঘটনা ঘটলেও সাম্প্রতিক ঘটনাটির দু'সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের জালে ধরা পড়ল এই দুই ব্যাক্তি। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, এই দুই ধৃতের বাড়ি দুর্গাপুরেই। তবে আগুন লাগানোর ক্ষেত্রে এই দুই ব্যাক্তির সঙ্গে আর কোনও চক্র জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।