"আকাশে পাখিরা কথা কয় পরস্পর। তারপর চ’লে যায় কোথায় আকাশে? তাদের ডানার ঘ্রাণ চারিদিকে ভাসে।" জীবনানন্দ দাশ পাখিদের কথা বলার অনুভুতি স্পর্শ করেছিলেন কবিতায়। এবার পাখিদের কোলাহলে সাড়া দিল পুলিশও। পাখিদের কথা শুনে নিশ্চিত নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিলেন পুলিশ কর্তারা।
Advertisment
কয়েক হাজার পাখি রয়েছে এই বিশ্বে। এরা কেউ জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দেয় আকাশে, কেউ মাটিতে, কেউ গাছে। পরিযায়ী পাখিরা এদেশ ওদেশ করে বেড়ায়। পাখিদের খাওয়া-দাওয়াও বৈচিত্র্যময়। নাদনঘাট থেকে পূর্বস্থলীর চুপির দূরত্ব মেরেকেটে ২০ কিলোমিটার। শীতে চুপিতে দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো পাখি এসে জমায়েত হয়। সেই পাখিরালয়ে হাজির হন পর্যটকরা। এবার নাদনঘাট থানার বটগাছে পাখিরা স্থায়ী আস্তানা পেল। পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট থানায় পাখিদের কিচির-মিচির কলরবে মোহিত হয়ে বটগাছে ঘর বানিয়ে দিল নাদনঘাট থানার পুলিশ। পুলিশের এই পক্ষী-প্রেম মুগ্ধ করেছে স্থানীয় মানুষকে।
শনিবার অসংখ্য ঝুড়ি থানা চত্ত্বরে থাকা প্রকাণ্ড বটগাছটির ডালে ডালে ঝুলিয়ে দিলেন পুলিশই। যাতে সহজে বাসা তৈরি করতে পারে পক্ষীর দল। নাদনঘাট থানার পুলিশ কর্মীরাও চাইছেন তাঁদের থানা চত্ত্বরে থাকা বটবৃক্ষই হয়ে উঠুক সকল পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় স্থল। আর তারা যেন সকাল-বিকাল কিচির-মিচির শব্দে পুলিশ কর্মীদের মন ভরিয়ে রাখে।
নাদনঘাট থানার পুলিশ কর্মীরা জানিয়েছে, কিছু দিন ধরে তাঁদের থানা চত্ত্বরে থাকা প্রকাণ্ড বটগাছটিতে বিভিন্ন ধরণের পাখির আনাগোনা শুরু হয়। দিন গড়ানোর সাথে সাথে বটগাছটিতে পাখিদের ভিড় আরও বাড়তে শুরু করে। নানা প্রজাতির পাখির হরেকরকম ডাক মন ভরিয়ে দেয় থানার পুলিশ কর্মীদের। পুলিশ কর্মীরাও তাই পাখিদের নিয়ে কিছু একটা করার ব্যাপারে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। থানা চত্ত্বরের বট গাছ ছেড়ে পাখিরা অন্য কোথাও চলে যাক, চাইছিলেন না পুলিশ কর্মীরা।
থানার ওসি সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগ নিয়ে এদিন পাখিদের বাসস্থান গড়াতে বটগাছটির ডালে ডালে ঝুড়ি ঝুলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পাখিদের পিপাসা মেটানোর জন্যে বটগাছ নিকটে মাটির পাত্রে জল রাখার ব্যবস্থাও করা হয়। সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, "কিছু দিন ধরে বিভিন্ন রঙের পাখি বট গাছটিতে বসতে শুরু করে। পরে পাখিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তা দেখে থানার সকলেই খুশি হন। নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ পেলে তাঁদের থানা চত্ত্বরের বটবৃক্ষে আরও অনেক পাখি জড়ো হবে,পাখিদের কলকল ধ্বনি পুলিশ কর্মীদের পাশাপাশি এলাকাবাসীকেও মুগ্ধ করবে। এমন প্রত্যাশা নিয়েই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন