দ্বিতীয় হুগলি সেতুর নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা বিকল। এরই জেরে এক যুবকের মৃত্যুর তদন্তে নেমে ধন্দ্বে পুলিশ। নিছক দুর্ঘটনা না খুন করে ওই যুবককে ফেলে দেওয়া হয়েছে, তার তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ মেলেনি। ঘটনার কিনারা করতে হিমশিম দশা শিবপুর থানার পুলিশের। এদিকে, শিবপুরের ৪৩/২ যাদব দাস লেনের বাসিন্দা বিক্রম দাস নামে ওই যুবকের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ। নবান্নের সামনে কাজিপাড়ার অ্যাপ্রোচ রোডে কাজিপাড়ার দিকে যাওয়ার রাস্তায় শার্প বেন্টের কাছে উদ্ধার হয় বিক্রমের রক্তাক্ত দেহ। ওই যুবকের কপালের বাঁ দিকে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন শিবপুরের বাসিন্দা বিক্রম দাস নামে ওই যুবক। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরই মৃতের পরিবার যুবকের মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মত্ত অবস্থায় বাস থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বিক্রমের। কিন্তু এটিকে নিছক দুর্ঘটনা বলে মানতে চায়নি মৃতের পরিবার। তাঁরা পুলিশের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, এলাকায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যুবকের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে পুলিশ তাঁদেরকে ফিরিয়ে দেয়। পরে ওই যুবকের মামা শিবপুর থানায় গিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
মৃত যুবকের পরিবারের দাবি, বুধবার বকুলতলার বাড়ি থেকে হাওড়া ময়দানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন বিক্রম। কিন্তু কীভাবে তিনি দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে গেলেন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই খুনের তত্ত্ব সামনে আসছে। বিক্রমের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া ময়দানের একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত বিক্রমের বছর দু'য়েক আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
তার পর থেকেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সেই নেশা করা নিয়েই বন্ধুদের সঙ্গে ঝামেলার জেরে তাঁকে খুন করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা পরিবারের। কিন্তু কে বা কারা বিক্রমের মৃত্যুর জন্য কে বা কারা দায়ী বা আদৌ কেউ দায়ী কিনা, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। এলাকার সিসি ক্যামেরাগুলি বিকল থাকার জেরেই তদন্ত নেমে ধন্দ্বে পুলিশ।
আরও পড়ুন- আজ থেকেই বাড়বে রাতের তাপমাত্রা, বৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের
এদিকে, হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় ৫৪টি সিসি ক্যামেরা দীর্ঘদিন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। কেন গুরুত্বর্পূণ এই জায়গার সিসি ক্যামেরাগুলির মেরামত হচ্ছে না? এপ্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ''প্রতি বছর এই সিসিটিভি ক্যামেরাগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি বাৎসরিক টেন্ডার করা হয়। এবছর কোভিডের দাপটে হাওড়া সিটি পুলিশের অনেক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার ও কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় সেই টেন্ডার প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। মূলত টেন্ডার না হওয়ার কারণেই অচল হয়ে রয়েছে সিসিটিভি ক্যমেরাগুলি। তবে খুব দ্রুত এগুলি সারিয়ে ফেলা হবে।''