পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘিরে আশান্ত হয়েছিল ভাঙড়। নিহত হয়েছিলেন আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা। নিহতের পরিবারের অভিযোগের আঙুল ছিল তৃণমূলের ভাঙড়ের 'তাজা' নেতা আরাবুল বাহিনীর দিকে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আরাবুল, তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম সহ মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল কাশীপুর থানার পুলিশ। খুন,অস্ত্র আইনৃসহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এই মামলা প্রসঙ্গে আরাবুল ইসলামের দাবি, 'এটা পুরো সাজানো ঘটনা। দুর্ঘটনার সময় আমি ও আমার ছেলে ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি ওই সময় বিডিও অফিসে ছিলাম। আমি বলছি যে ওই ছেলেটার গুলিতেই তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছে।'
হাড় হিম হিংসা দেখেছে ভাঙড়। লাঠি-বাঁশ হাতে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপির পাশাপাশি মুড়ি মুড়কির মতো বোমা পড়েছে, চলেছে গুলি। একের পর এক পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয়, গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ ছিল, হামলার মুখে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের জেরে একই দিনে, আইএসএফ, তৃণমূল কর্মী সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে অন্যতম বছর চব্বিশের আএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা। তাঁর বাবার অভিযোগ, আরাবুল ইসলামের বাহিনীর গুলিতেই নিহত হয়েছেন তাঁর ছেলে মহিউদ্দিন। থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন।
আরও পড়ুন- খুন হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন নওশাদ! ISF বিধায়ককে জেড ক্যাটাগরির সুরক্ষা কেন্দ্রের
আরও পড়ুন-
গত শুক্রবার অশান্ত ভাঙড়ে গিয়েছিলেন রাজ্য়পাল। তার আগে বৃহস্পতিবার রাতেই পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘিরে প্রবল অশান্তি দেখে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন তিনি রাজ্যপাল। বলেন, 'বাংলায় প্রাক-নির্বাচনে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে শুনে মর্মাহত। নির্বাচনে বিজয় মৃতদেহ গণনার উপর নয়, ভোট গণনার উপর নির্ভর করা উচিত। আমাদের সংবিধান আক্রমণের মুখে। শয়তানের এই খেলা শেষ হওয়া উচিত। শেষ হবে, শেষের শুরুটা হবে পশ্চিমবঙ্গে।'
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সংযোজন ছিল, 'গণতন্ত্রে জনগণই প্রভু, নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা তাদের অবিচ্ছেদ্য অধিকার। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে হিংসার কোনও স্থান নেই। যে কোনও মূল্যে সহিংসতা নির্মূল করা হবে এবং হিংসা এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম বলি হবে। কোনও অবস্থাতেই গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।'