Police investigation on child rape and murder: বাবা স্কুলের কাছে তার জন্য অপেক্ষা করছে, তাই সাইকেল নিয়ে তাড়াতাড়ি যাবে বলে রওনা দিয়েছিল ১০ বছরের মেয়েটি। ভাইদের বলে গিয়েছিল, ‘এক্ষুনি আসছি’। সেই শেষ দেখা। আর, তার ফেরা হয়নি।
সময়টা ছিল, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস, শীতকাল। মালদার চাঁচল থানা এলাকায় জনমানবহীন কৃষিজমি থেকে জ্বালানির খড় সংগ্রহ করতে এসেছিল ওই মেয়েটি। সঙ্গে ছিল সাত এবং পাঁচ বছর বয়সি ছোট দুই ভাই। কাজের ফাঁকেই হঠাৎ তারা দেখতে পায়, সামনে দাঁড়িয়ে আছে অপরিচিত এক ব্যক্তি। পরনের শাল দিয়ে মুখের অধিকাংশই ঢাকা। মেয়েটিকে সেই ব্যক্তি বলে যে, তার বাবা স্কুলের কাছে অপেক্ষা করছেন। আর, লোকটিকে বলেছেন তাঁর মেয়েকে নিয়ে যেতে। শুনেই সাইকেল নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে মেয়েটি। যাওয়ার পথে ভাইদের বলে যায়, ‘খড় কুড়োতে থাক, আমি আসছি’।
আর সে ফেরেনি। পরদিন তার মৃতদেহ মেলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে হরিশচন্দ্রপুর থানা এলাকার এক কলাবাগানে। ময়নাতদন্তে স্পষ্ট হয়, ধর্ষণ করার পর খুন করা হয়েছিল।
তদন্তে নেমে প্রথমে জোরালো কোনও সূত্র খুঁজে পাননি মালদার হরিশচন্দ্রপুর থানার সাব-ইনস্পেকটর রামপ্রসাদ চাকলাদার। মেয়েটির দুই ভাইয়ের কেউই লোকটির চেহারা ঠিকমতো দেখতে পায়নি। শুধু এটুকু বলেছিল, মুখে কাটা দাগ আছে। শাল দিয়ে মুখের অনেকটাই ঢাকা থাকলেও, সেটা দেখা গিয়েছিল। দুই শিশুর বয়ান আর ওই সামান্য তথ্যের ভিত্তিতেই আঁকানো হয় অভিযুক্তের ছবি ( তদন্তের ভাষায়- portrait parle)। তার ভিত্তিতেই শুরু হয় অপরাধীর খোঁজ।
দীর্ঘ, অক্লান্ত চেষ্টায় অবশেষে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকের নজরে আসে ২৭ বছরের এক যুবক। নাম, বিভাজন আচার্য ওরফে বিদ্যুৎ ওরফে ঠাকুর। চাঁচল থানারই কলিগ্রাম মধ্যপাড়ার বাসিন্দা। মুখে কাটা দাগ ছিল। বক্তব্যেও দেখা দেয় নানা অসঙ্গতি। শেষে পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়ে অভিযুক্ত। দোষ স্বীকার করে নেয়।
আরও পড়ুন- কোন রাজ্যে BJP-র ফল সবচেয়ে ভালো হবে? রাখঢাক না রেখে ‘বলেই’ দিলেন মোদী
সঠিক সময়েই চার্জশিট দাখিল হয়েছিল এই মামলার। অভিযুক্তকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রেখে বিচারপর্ব চলেছে। সম্প্রতি সেই মামলায় রায় বেরিয়েছে। বিভাজনকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানার সাজা দিয়েছে আদালত।
(পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে সংগৃহীত)