ময়নাগুড়িতে দূর্ঘটনাগ্রস্থ বিকানের এক্সপ্রেসের কামরা ঘিরে এখনও ভূতের আতঙ্ক কাটলো না। দূর্ঘটনার পর থেকে প্রতি রাতেই নাকি ভূত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ময়নাগুড়ি ব্লকের দক্ষিন মোয়ামারি এলাকায়। দূর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের কামরার পাশ দিয়ে গেলেই নাকি ভূত ভর করছে গ্রামবাসীদের। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে গোটা গ্রাম।
আর এই সুযোগে পোয়াবারো এলাকার ওঝাদের। তারাও ভূত তাড়ানোর নামে পকেট ভরছেন। গ্রামের অনেককেই ভূতে ধরেছে। ফলে অসুস্থ বহু। গ্রামের কেউ কেউ বলছেন দূর্ঘটনার দিন ট্রেনের ভেতরে থাকা কাঁচা মাছ বাড়িতে এনে খাওয়ার কারনেই নাকি ভূত অসন্তুষ্ট হয়ে ভর করছে বেছে বেছে ওই গ্রামের বাসিন্দারের উপর। বিভিন্নভাবে বুঝিয়েও ভূতের আতঙ্ক দূর করা সম্ভব হয়নি দক্ষিন মোয়ামারি গ্রামে। কেউ অসুস্থ হলেই ডাক্তারের বদলে ডাক পড়ছে ওঝাদের।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিজ্ঞান কর্মীদের যুক্তিকেও নস্যাৎ করে দিচ্ছেন গ্রামবাসীদের অদিকাংশ। এবার ভুতের আতঙ্ক দূর করতে পথে নামল পুলিশ।
সোমবার ছিল অমাবস্যার রাত। নিকষ কালো রাতেই নাকি ভূতের উপদ্রব বেশি হয়। তাই এই রাতেই ভুত ধরতে ময়নাগুড়ির মৌয়ামারীর দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলের বগির সামনে সদলবলে পৌঁছে যায় ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাসের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশবাহিনী, দমকল ও আরপিএফ কর্মীরা রেল দুর্ঘটনা স্ত ঘুরে দেখেন। খোঁজাখুঁজি করেন ভূতের। কিন্তু, কোথায় ভূত?
গভীর রাত পর্যন্ত এলাকায় চষে ফেলে পুলিশ। কখনও রেললাইনের পাশে পড়ে থাকা দূর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের কামরায়, আবার কখনও-বা বাঁশ ঝাড়ে। রাত ১২ টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত চলে ভূতের তল্লাশি। তবুও দেখা মিলল না ভূতের।
ভূতের তল্লাশি প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করতেই ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস হাসতে হাসতে বলেন, 'আসলে গ্রামে যে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছে তা দূর করতেই আমাদের দূর্ঘটনাস্থলে আসা। আমরা গ্রামবাসীদের বোঝাতে চেয়েছি ভূত-প্রেত বলতে কিছু নেই। সবটাই ভ্রান্ত ধারণা।'
গত ১৩ জানুয়ারি গৌহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেস দূর্ঘটনার কবলে পড়ে ময়নাগুড়ি সংলগ্ন দক্ষিন মৌয়ামারি এলাকায়। এই দূর্ঘটনায় প্রান হারান ৯ জন যাত্রী। তারপর থেকেই গ্রামে ভূতের আতঙ্কের সূত্রপাত।