যাদবপুর কাণ্ডে ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব়্যাগিং বিরোধী আইনের ধারাতে (ব়্যাগিং ইন এডুকেশনাল ইন্সটিটিউশন অ্যাক্ট, ২০০০) মামলা রুজু করার আবেদন জানাতে পারে আদালতে। মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। আদালতে হাজির করানো হবে ধৃত দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ, সৌরভ চৌধুরীকে। সূত্রের খবর, শুনানির সময়ই ধৃতদের বিরুদ্ধে ব়্যাগিং বিরোধী আইনে মামলা করার আবেদন করা হতে পারে।
সূত্রের খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে র্যাগিং বিরোধী আইনের ৪ নম্বর ধারা প্রয়োগ করতে চায় কলকাতা পুলিশ। ওই ধারায় উল্লেখ, র্যাগিংয়ের অভিযোগে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা দু'টোই হতে পারে। র্যাগিংয়ের অভিযোগে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ওই ছাত্রকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হবে। আরও কখনও দোষী পড়ুয়া সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে না।
উল্লেখ্য, হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে এর আগে ৩০২ ধারা (খুন) এবং ৩৪ ধারায় (সম্মিলিত অপরাধ) মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত ৯ অগাস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগ, র্যাগিংয়ের কারণেই মৃত্যু হয়েছে যাদবপুরের নবাগত ওই ছাত্রের। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃত ছাত্রের বাবা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ যাদবপুরের প্রাক্তনী এবং পড়ুয়া মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের মধ্যে ১২ জন যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ধৃত। হস্টেলের গেটে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জয়দীপ ঘোষ নামে এক প্রাক্তনীকে গত শনিবার গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় এফআইআরে ৩০২ ধারা এবং ৩৪ নম্বর ধারা যুক্ত করেছিল পুলিশ। এ বার এই মামলায় ধৃতদের বিরুদ্ধে লালবাজার ব়্যাগিং বিরোধী আইন যুক্ত করার আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর।
হস্টেলে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ সম্প্রতি একটি নীল হাফপ্যান্ট এবং গেঞ্জি উদ্ধার করে। এক পড়ুয়ার দাবি, ওই পোশাক মৃত ছাত্রের। ৯ অগস্ট ওই ছাত্রকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল বলেও অনেকের দাবি। ট্যাক্সি চালকেরও দাবিও মিলিয়ে দেখছে পুলিশ। এসবের জেরেই গোটা ঘটনায় ব়্যাগিং-যোগ রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষালেরও দাবি, 'একটা অত্যাচারের গল্প পাচ্ছি।' ধৃতদের বয়ানেও একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।