কোমরে দড়ি বেঁধে চুরিতে অভিযুক্তদের নিয়ে রাস্তায় ঘোরাল পুলিশ। উদ্দেশ্য, 'চোরেদের' চিনিয়ে দেওয়া, যাতে তাদের চিনে রেখে সচেতন থাকতে পারেন অন্যরা। যদিও পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশকর্মীদের এহেন তৎপরতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সম্প্রতি জামালপুরের একের পর এক দোকানে চুরির ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছিল ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বসিন্দাদের মধ্যে। একটি দোকানে চুরির ঘটনায় দু'জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এদিন তাদের নিয়েই জামালপুরে দীর্ঘ রাস্তা ঘুরল পুলিশ। চুরির ঘটনায় ধৃতদের কোমরে দড়ি বেঁধে রাস্তায় ঘোরাল পুলিশ। এহেন দৃশ্য দেখে পথচলতি অনেকেই তা ক্যামেরাবন্দি করে ফেললেন। একটা সময় সেই ছবি তুলেত রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
জামালপুর থানার কাছেই রাস্তার ধারে চায়ের দোকান-সহ বেশ কিছু ছোট দোকান রয়েছে। দিন দুই আগে একটি দোকানের অ্যাসবেসটস ভেঙে ভিতরে ঢোকে কয়েকজন। দোকানে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী চুরি করে নিয়ে চম্পট দেয় তারা। পরের দিন সকালে দোকান খুলতেই চুরির ঘটনা নজরে আসে দোকানমালিকের। থানায় অভিযোগ জানানো হয়।
অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম শেখ সাবির ও লব বেরা। ধৃত সাবিরের বাড়ি জামালপুরের সেলিমাবাদ গ্রামে। অপর ধৃত লবের বাড়ি পুলমাথা এলাকায়। জেরায় ধৃতরা ওই দোকানে চুরির কথা স্বীকার করে নেয়। এরপরই চুরির সামগ্রী উদ্ধারে নামে পুলিশ। উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া বেশ কিছু সামগ্রী। পরে ধৃতদের নিয়ে জামালপুরের রাস্তায় ঘোরানোর সিদ্ধান্ত নেন পুলিশকর্মীরা।
আরও পড়ুন- রাজ্যে বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ, চিন্তার কেন্দ্রে কলকাতার মৃত্যু হার
এমনকী এদিন চুরির ঘটনায় ধৃত দু'জনকে দেখিয়ে তাদের চিনে রাখতে বলতে শোনা যায় কয়েকজন পুলিশকর্মীকে। এক পুলিশকর্মী বলেন, 'দুজনকে দেখে রাখুন, এদের থেকে সাবধান থাকবেন। রাতে এদের দেখলেই সচেতন হোন। প্রয়োজনে পুলিশে জানান'। যদিও অপরাধী ধরা পড়লে আইন মোতাবেক তার সাজা হবে। আদালত তার শাস্তির ব্যবস্থা করবে। দেশের আইন সেকথাই বলে।
কিন্তু অভিযুক্তদের এভাবে রাস্তায় কোমরে দড়ি বেঁধে ঘুরিয়ে চেনানোর প্রক্রিয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল। জামালপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ''এলাকার মানুষজন যাতে চোরেদের চিনে রাখতে পারে তাই তাদের রাস্তায় ঘোরানো হয়েছে''। তবে এপ্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনের ব্যাখ্যা, ''আমার কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে তথ্য নেই। কাউকে এমন করে ঘোরানো যায় না। তবে এটা কেউ করে থাকলে অপরাধের পুনর্নির্মাণের জন্য করা হয়েছে বলেই মনে হয়।'' জানা গিয়েছে বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হবে।