বাইরে আচমকা ফাঁকা হয়ে যাওয়া শুনশান রাস্তা! তার মধ্যেই সামান্য কয়েকজনের ছোটাছুটি আর গলার আওয়াজ। সঙ্গে প্যাট-প্যাট শব্দ। কৌতূহলে বহুতলের ওপরের বারান্দা থেকে মুখ বাড়াতেই এক বাসিন্দা দেখতে পান, জনাকয়েক যুবক দৌড়ে পালাচ্ছে। হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। উলটো দিক থেকে ছুটে আসছে এক মোটামতন গেঞ্জি পরা লোক। তারও হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। মোবাইল ফোনের সৌজন্যে দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দি করতে ওই ব্যক্তি ভুল করেননি।
বহুতলের অন্য বাসিন্দারাও ততক্ষণে ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। স্বভাবতই তাঁরা দিনেদুপুরে এমন সিনেমামার্কা হাড়হিম করা দৃশ্য দেখে ভয় পেয়েছেন। যিনি ছবি তুলছিলেন, তাঁকে ছবি তোলার জায়গা থেকে সরিয়ে আনার জন্য তাঁরা চেষ্টা করেছেন। মোবাইলের ক্লিপে সেই ভয় পাওয়ার প্রতিক্রিয়াগুলোও শোনা গিয়েছে। মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ভাইরাল হতে দেরি হয়নি।
পরে জানা গিয়েছে, গেঞ্জি পরা যিনি আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দৌড়চ্ছিলেন, তাঁর নাম রতন রায়। রাজ্য পুলিশের ব্যারাকপুর লাটবাগান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৯৯৬ ব্যাচের কনস্টেবল থেকে সদ্য এএসআই পদে পদন্নোতি পাওয়া রানাঘাট থানার অফিসার। ওজন প্রায় ১০২ কেজি। ওই অবস্থাতেই ডাকাতদের পিছু তিনি ধাওয়া করেছিলেন নিজের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে। চার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছেন। তার মধ্যে দু'জনকে নিজের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে ঘায়েল করেছেন।
আরও পড়ুন- একই সময়ে দুই শহরে একই সংস্থার শোরুমে হাড়হিম ডাকাতি, বিরাট চক্রান্তের সন্দেহ পুলিশের!
এবারই অবশ্য প্রথম নয়। এর আগে ফুলিয়ায় তিনি যখন দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময় রীতিমতো মাটিতে ঝাপটাঝাপটি করে এভাবেই দুই দুষ্কৃতীকে কাবু করেছিলেন তিনি। এই ব্যাপারে ওই এএসআইয়ের প্রতিক্রিয়া, 'পুলিশের সম্মান বাঁচাতেই যা করার করেছি।' তাঁর এই প্রয়াসের সুবাদে পুলিশের যেমন সম্মান বেড়েছে। তেমনই উদ্ধার হয়েছে যে বিপণিতে ডাকাতি হয়েছিল, সেখান থেকে লুঠ হওয়া গয়না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সুবাদে পরিবারের কাছে তা পৌঁছতে দেরি হয়নি। ঘটনাটি দেখে যথারীতি উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবারের লোকজন। ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন তিনি ঠিক আছেন কি না!