পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র মালদার গাজোল। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠলো তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজোল ব্লকের বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, বোর্ড গঠনের আগে পুলিশ কর্মীদের তির-ধনুক, বাঁশ, ইট নিয়ে ধাওয়া করে স্থানীয় কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি সমর্থকরা। ওই দলেই ছিলেন নির্দল প্রার্থীরাও। এই হামলার ঘটনায় পাঁচ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার জখম হয়েছেন। তাঁদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে ঘটনাস্থলে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে পৌঁছায় গাজোল থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। আপাতত ওই এলাকায় উত্তেজনা থাকায়, বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে।
গাজোল ব্লকের বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ১২টি। এবারে এই পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। তৃণমূল পেয়েছে পাঁচটি আসন। বিজেপি পেয়েছে একটি আসন। সিপিএমের দখলে তিনটি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে দু'টি আসন এবং নির্দল পেয়েছে একটি আসন। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতের নিয়ম অনুযায়ী এবং প্রশাসনেরক পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এই বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন ছিল। বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই বিশাল পুলিশ বাহিনী গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয়। কিন্তু পুলিশ শাসকদলের পক্ষে রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী, সমর্থকেরা বচসা শুরু করে। আর তাতেই হঠাৎ করেই কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- বিছানায় বান্ডিলের পর বান্ডিল টাকা, গুনছেন তৃণমূলের অঞ্চল প্রধান! ভাইরাল ভিডিও-তে ভয়ঙ্কর অভিযোগ
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা দৌড়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচায়। তার মধ্যে জখম হন পাঁচ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার। আহত এক পুলিশকর্মীর কথায়, 'আমরা নিজেদের ডিউটি করছিলাম। হঠাৎ করে কিছু মানুষ তির-ধনুক, লাঠি , ইঁট নিয়ে জমায়েত হয়। এরপরে অতর্কিতে কর্তব্যরত পুলিশের অফিসার, কনস্টেবল ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ওপর হামলা চালাতে শুরু করে।'
এদিকে পুরো ঘটনাটি নিয়ে নিন্দা করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি বলেন, 'তৃণমূলকে আটকাতে এখন রামধনু জোট এক হয়েছে। বিভিন্ন ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েতগুলিতে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে তৃণমূলের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাতে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার কর্মীরাও বাদ যাচ্ছেন না। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।' গাজোলের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মনের দাবি, 'এরকম কোনও ঘটনার খবর আমাদের জানা নাই। তবে তৃণমূলের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।' কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক অর্জুন হালদার জানিয়েছেন, 'তৃণমূলের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ত্রিশঙ্কু বোর্ডগুলিতে তৃণমূল গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।'