স্কুল খুললেও পথে দেখা নেই পুলকারের। যে সমস্ত স্কুলের নিজস্ব বাস রয়েছে সেগুলি চালু থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি অভিভাবকদের। ফলে স্কুলে যাওয়া এবং আসার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে পড়ুয়ারা। করোনার কারণে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় পুলকার ব্যবসা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এখন স্কুল খুললেও রাস্তায় দেখা মিলছে না পর্যাপ্ত পুলকার।
পুলকার মালিকদের অভিযোগ, 'লকডাউনের সময় কয়েক মাস ভাড়া দিলেও স্কুল বন্ধ থাকার সময় অধিকাংশ অভিভাবকই মাসের পর মাস ভাড়া দেননি। অথচ পুলকার চালকের মাস মাইনে থেকে শুরু করে মেনটেনেন্সের খরচ আমাদের করে যেতে হয়েছে।'
এবিষয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ, এতদিন পর হঠাত করেই স্কুল বন্ধ থাকার সময়কালীন অর্ধেক ভাড়ার দাবি করা হচ্ছে। ইন্দ্রানী দত্ত নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘মাসে চার হাজার টাকার বিনিময়ে আমার ছেলে পুলকারে যাতায়াত করত, দু'বছরের ভাড়া হয় ৯৬ হাজার টাকা। এখন সংশ্লিষ্ট পুলকার চালক অর্ধেক টাকা অর্থাৎ ৪৮ হাজার টাকা দাবি করছেন। কিন্তু এত টাকা কেন দেব?'
এব্যাপারে পুলকার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়, এভাবে টাকা চাওয়া অন্যায়। যে সময় স্কুল বন্ধ ছিল সেই সময়ের টাকা কেনইবা দেবেন অভিভাবকরা। সংগঠনের আশ্বাস, যে সব পুলকার মালিকরা এভাবে টাকা দাবি করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই মুহুর্তে রাজ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি পুলকার রাস্তায় নেমেছে। দফায় দফায় বাড়বে পুলকারের সংখ্যা।
আরও পড়ুন লং কোভিডে শিশুদের ঝুঁকি কতটা, স্কুলে-টিউশনে যে বিষয়গুলি মানা জরুরি, জেনে নিন
পুলকার মালিকদের একাংশের বক্তব্য, স্কুল খুলে গেলেও অনেক পড়ুয়াই আর পুলকারে যাচ্ছে না। বেড়েছে পেট্রল, ডিজেলের দামও। ফলে লকডাউনের আগের ভাড়ায় আর বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া-আসা সম্ভব নয়।
চরম আর্থিক সংকটে এই মুহূর্তে পুলকার মালিকরা। অনিল মালের কথায়, ‘দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। ফলে গাড়ির ট্যাক্স, রক্ষণাবেক্ষণ সহ যাবতীয় খরচ পকেট থেকেই গিয়েছে। সেই সঙ্গে আগের থেকে বেড়েছে পেট্রল ডিজলের দাম। ফলে আমরা ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে।' স্কুলের সঙ্গে পুলকারের সম্পর্কটা একে অপরের পরিপূরকের মতো। অথচ স্কুল খুলে গেলেও কার্যত ব্রাত্য পুলকার।
আরও পড়ুন ২ বছর পর বাজল স্কুলের ঘণ্টা, ক্লাসে ফিরতে পেরে খুশি খুদে পড়ুয়ারা
দীর্ঘ প্রায় দু'বছর কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় চার হাজার পুলকার রাস্তায় নামেনি। চাহিদা না থাকায় সেগুলি পড়ে পড়ে নষ্ট হতে বসেছে। অনেক পুলকার মালিক গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। আবার, তীব্র অর্থসংকটের জেরে কিস্তি শোধ না করতে পারার জন্য অনেক পুলকার ফিনান্স কোম্পানিগুলি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নিয়েছে। এটাও পুলকার সংকটের অন্যতম কারণ বলেই মত পুলকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের।