ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের চিকিৎসা ও রেশন মেলার ক্ষেত্রেও রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২রা মে-র পর থেকেই বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে সরব হয় বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলো। রাজ্য প্রশাসন পদক্ষেপ না করায় আদালতের দ্বারস্থ হন আক্রান্তরা। ঘর ছাড়াদের ঘরে ফেরাতে কলকাত হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর বেঞ্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দায়িত্ব দেন। দিন কয়েক আগেই হাইকোর্টে খামবন্দি রিপোর্ট জমা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই এদিন মামলার শুনানি হয়। এদিন পুলিশ প্রশানকে হাইকোর্টের নির্দেশ, ভোট পরবর্তী হিংসার যতগুলো অভিযোগ ছিল সব কটা রেকর্ড করতে হবে। যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের বয়ানও রেকর্ড করতে হবে পুলিশকে।
হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জমা করা রিপোর্ট অনুসারে, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা দেখতে গিয়ে যাদবপুরে সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আক্রান্ত হয়েছিলেন। যার ভিত্তিতে এদিন ডিসিপি এসএসডি দক্ষিণ রশিদমুণির খানকে শোকজ করে আদালত। কেন তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা লাগু হবে না? ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত মানিকতলার বিজেপি নেতা অভিজিত সরকারের মৃতদেহের দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। কলকাতার কম্যান্ড হাসপাতালে এই ময়না তদন্ত হবে।
একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের নির্দেশ, ভোট পরবর্তী হিংসায় সকল আক্রান্তের কাছে রেশন পৌঁছে দিতে হবে। যদি কোনও আক্রান্তের কাছে রেশন কার্ড না থাকে, সেক্ষেত্রে রাজ্যকেই রেশন দিতে হবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ জুলাই। ভোট পরবর্তী হিংসায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তের মেয়াদও ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।
গত ১৮ জুন ভোট পরবর্তী হিংসা ঘটনার তদন্তে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে। কিন্তু হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কমিটি জানিয়েছে, রাজ্য কোনও সহযোগিতা ও তথ্য দেয়নি। এই নিয়েও রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত। দায়িত্বপূর্ণ পদাধিকারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন