ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আর্জি জানিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু, রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। অর্থাৎ ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপর গুরু দায়িত্বের যে নির্দেশ আদালত দিয়েছিল তা বহাল রইল। ফলে অস্বস্তি বাড়ল রাজ্য সরকারের।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের তরফে ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি বলেছেন, 'জাতীয় কমিশনে ৫৪১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে রাজ্য কমিশনের কাছে একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি। এটা খুব উদ্বেগজনক। এমন পরিস্থিতি কেন তৈরি হবে।'
আরও পড়ুন- বঙ্গভঙ্গের জল মাপা চলছে, উত্তাপ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে
এদিন আদালতে রাজ্য সরকারের তরফে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে করা পদক্ষেপের তালিকা জমা করা হয়। যা দেখে বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, 'এসব কিছুই দেখে লাভ নেই। তদন্ত সঠিকভাবে হচ্ছে না। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত বা ঘরছাড়াদের বক্তব্য অনেক সময় পুলিশ শুনছে না, আবার শুনলেও পদক্ষেপ করছে না। তদন্তের কোনও অগ্রগতি নেই। রাজ্যের আশ্বাসে আদালতের ভরসা নেই।'
ভোট পরবর্তী হিংসা চলছে রাজ্য়ে। প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়। প্রথমে হাইকোর্টে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছিল। এই কমিটিই সব খতিয়ে দেখে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেবে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ভোটে পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিকে গুরু দায়িত্ব দেয়।রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। নির্দেশে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের পরিস্থিতি ঘুরে দেখে মানবাধিকার কমিশন ৩০ জুনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে আদালতকে। এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে রবিবার আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। আর্জি ছিল, এখনই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে না জড়িয়ে রাজ্যকে আরও একবার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন