'দিদির দূতেদের প্রবেশ নিষিদ্ধ', মালদহের ইংরেজবাজারের গ্রামে এমনই পোস্টার লাগানো ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে। এলাকার বেহাল রাস্তা যতদিন পর্যন্ত সংস্কার করা না হবে ততদিন দিদির দূত বা রাজনৈতিক কোনও নেতার গ্রামে প্রবেশ নিষিদ্ধ, এই মর্মে পোস্টার লাগিয়েছেন এলাকারই বাসিন্দারা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন দিদির দূতেরা। এলাকায় উন্নয়নের কতটা কাজ হয়েছে বা কোন কোন কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে মূলত এই বিষয়গুলি সম্পর্কেই খোঁজ-খবর নিতে গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন তৃণমূলের টিকিটে জেতা জনপ্রতিনিধিরা। রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে জোড়াফুলের সাংসদ, বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্য-কর্মাধ্যক্ষরা গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন। এদিকে, 'দিদির সুরক্ষাকবচ' কর্মসূচি নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে নজিরবিহীন বিক্ষোভের মুখে পড়তে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে।
অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের তারকা সাংসদ-বিধায়ক-মন্ত্রীদের ঘিরে কোথাও বিক্ষোভ হয়েছে। কোথাও আবার তৃণমূলের নেতাদের গ্রামে দেখেই তেড়ে গিয়েছেন বাসিন্দারা। এবার মালদহের ইংরেজবাজারের কাজিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নজিরবিহীন পোস্টার। গ্রামবাসীরাই ওই পোস্টার লাগিয়েছেন। বেহাল রাস্তার সংস্কার না হলে 'দিদির দূতেদের' গ্রামে ঢোকা বন্ধ শীর্ষক ওই পোস্টার ঘিরেই হইচই পড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- মেয়ের হাত ধরে টানছিল মদ্যপরা, বাঁচাতে যেতেই দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে মারল বাবাকে
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ২০ বছর ধরে ইংরেজবাজারের কাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের বাগবাড়ি খোয়ার মোড় থেকে বাহান্ন বিঘা পর্যন্ত রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গ্রামবাসীরা সরকারি বিভিন্ন দফতরে রাস্তা সংস্কারের আবেদন জানিয়েছেন, তবুও সুরাহা হয়নি বলে দাবি। তাই বাধ্য হয়েই এবার রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের বয়কটের পথ ধরেছেন এলাকার বাসিন্দারা। শুধু দিদির দূতরাই নন, কোনও দলের নেতাদেরই গ্রামে দেখতে চান না বাসিন্দারা। নিজেদের দাবি জোরালো করতে বেহাল রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়েও প্রতিবাদ দেখিয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশ।
এদিকে, রাস্তা সংস্কারের দাবিতে গ্রামবাসীদের এহেন প্রতিবাদে শাসকদলকেই টিপ্পনি কেটে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। গেরুয়া দলের দক্ষিণ মালদহের সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, 'গ্রামবাসীরা এই দিদির দূতদের দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা ভাবছেন, ভোট লুঠেরারা বোধ হয় আবার আসছে। সেই কারণেই এই পরিস্থিতি হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- তৃণমূলে চন্দ্র-উদয়? প্রস্তাবের অপেক্ষা মাত্র!
অন্যদিকে, এহেন প্রতিবাদের পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা জেলার জোড়াফুল শিবিরের অন্যতম নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তাঁর কথায়, 'মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ শোনার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এই কর্মসূচি নিয়েছেন। আর বাকি যা হচ্ছে এটা বিরোধীদের চক্রান্ত।'