গোঘাটের প্রবীর পাল। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হেলায় উড়িয়ে কচিকাঁচাদের নিয়েই দিব্যি আছেন মাস্টারমশাই। গ্রামের স্কুলে বিনা বেতনের 'চাকরি'। পড়ানোর ফাঁকে স্কুলের বাগান পরিচর্যাতেও সমান নজর তাঁর। দীর্ঘদিন ধরে এটাই রুটিন বছর পঁয়তাল্লিশের প্রবীর পালের। করোনাকালে বন্ধ স্কুল। তাতে কী? খুদেদের নিজের বাড়িতে ডেকেই পড়ান তিনি। কখনও বা তাদের বাড়িতে গিয়েও পড়িয়ে আসেন মাস্টারমশাই। শিক্ষক দিবসে আদরের মাস্টারমশাইকে শ্রদ্ধা খুদে পড়ুয়াদের।
Advertisment
হুগলির গোঘাটের চাতরা গ্রামে প্রবীর স্যারকে এক ডাকে সবাই চেনেন। গ্রামের কচিকাঁচাদের খুব কাছের এই মানুষটি। অভিভাবকরাও শ্রদ্ধার নজরে দেখেন প্রৌঢ়কে। চাতরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ান প্রবীর পাল। তবে তিনি সরকারি চাকুরে নন। চাকরির জন্য কোওদিন চেষ্টাও করেছিলেন কিনা জানা নেই। স্কুলের অন্য মাস্টারমাশাইদের সঙ্গে তিনিও সমাজ গড়ার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
স্কুলে বিনা বেতনেই ছাত্র পড়ান প্রবীর মাস্টার। শুধু পড়ানোই নয়। মিড ডে মিলে বাচ্চাদের খাবারের বাসনও মাজতে দেখা যায় তাঁকে। স্কুলের বাগানের নিয়মিত পরিচর্যা তাঁরই হাতে। সবটাই করেন মনের আনন্দে। কচিকাঁচাদের ভালোবেসে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাঁর। জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই পক্ষাঘাতে নিম্নাঙ্গ অসাড় হয়। চলাফেরা করায় ঘোর সমস্যা। তাতে কী? তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা।
Advertisment
ছোট থেকেই শিক্ষকতা করার প্রবল ইচ্ছা ছিল প্রবীর পালের। শারীরিক সমস্যার জেরে সরকারিভাবে শিক্ষকের মর্যাদা জোটেনি। তবে নিজের গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে তিনি কুড়ি বছর ধরে পড়িয়ে চলেছেন। স্কুলে বিনা বেতনেই ছাত্রছাত্রীদের পড়ান প্রবীর মাস্টার। স্কুলের অন্য শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক সবাই প্রবীর স্যারকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন।
প্রবীর পালের বাড়িতে শিক্ষক দিবসের ছোট্ট অনুষ্ঠানে খুদে পড়ুযারা