নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগে মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ও ওএনআর শিট পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সংস্থা নাইসার কর্তা নীলাদ্রি দাস জামিন পেয়েছেন। এবার ওই মামলায় তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন মঞ্জুর হল প্রসন্ন রায়ের। নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে প্রসন্ন 'মিডলম্যান' হিসাবে কাজ করেছিলেন বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এদিন প্রসন্ন রায়ের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন মুকুল রোহতগি।
২০২২ সালের অগাস্ট মাসে প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। উত্তর ২৪ পরগনা সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকার চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তিনি পাঠাতেন বলে দাবি সিবিআইয়ের। দেশে ও দেশের বাইরে তাঁর বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছিল বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তদন্ত এগোতেই প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতেও নাম জড়ায় প্রসন্নর।
শুক্রবার প্রসন্নর গ্রেফতারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ে সিবিআই। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, 'অভিযুক্তকে নিয়োগ মামলায় মিডলম্যান হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, অন্যের হয়ে টাকা তুলতেন প্রসন্ন। কিন্তু যাঁদের হয়ে টাকা তুলতেন প্রসন্ন, তাঁদেরই ছোঁয়নি সিবিআই।'
পাল্টা, প্রসন্নর জামিনের বিরোধিতায় সিবিআইয়ের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে জানান, 'টাকা তোলার জন্য মিডলম্যান হিসাবে কাজ করতেন প্রসন্ন, এটা বিরাট দুর্নীতি।' এরপরই বিচারপতি বলেন, 'আপনারা এখনও রাঘববোয়ালদের ছুঁয়ে দেখেননি। সব বড় মাথাকে কি আপনারা গ্রেফতার করেছেন? যাঁরা মিডলম্যানের থেকে টাকা নিলেন তাঁরা এখনও মুক্ত, আর যিনি টাকা তুললেন তিনি জেলে?'
এরপর সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, 'কয়েকজন সরকারি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের অনুমতি না মেলায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা এগনো যাচ্ছে না। এ জন্য মামলা ও তদন্তে দেরি হচ্ছে।' পাল্টা বিচারপতি প্রশ্ন করেন যে, 'সিবিআই অনুমতির জন্য কতদিন অপেক্ষা করবেন? যতদিন না অনুমতি পাবেন ততদিন কি প্রসন্ন জেলে থাকবেন?'
এরপরই প্রসন্ন রায়ের জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট।
সিবিআইয়ের দাবি, ২০১৪ সাল থেকে ধৃত শান্তিপ্রসাদ সিনহার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল প্রসন্ন রায়ের। প্রসন্নর সল্টলেকের অফিসে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি হত। সেই তালিকা ইমেল করে পাঠানো হত এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে। ওই অফিসেই অযোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকও হত। ধৃত প্রসন্ন রায় চাকরিপ্রার্থীদের থেকে সরাসরি টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি কেন্দ্রীয় এজেন্সির।