ভোটগ্রহণের প্রথম অভিজ্ঞতা তিক্ত হয়ে থাকল মহিলা পরিচালিত বুথের ভোটকর্মীদের। চাকরি গেলেও আর ভোটগ্রহণ উৎসবে অংশগ্রহণ করতে চান না তাঁরা। ঘটনার পর থেকে তাঁদের চোখমুখে আতঙ্কের ছাপ। ভয়ে কেঁদেও ফেললেন মহিলা পরিচালিত বুথের প্রিসাইডিং অফিসার অঙ্গনা শেঠ।
Advertisment
বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের ময়ূরেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজচন্দ্রপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ এবার মহিলা পরিচালিত করা হয়েছিল। সেখানে পাঁচ জন মহিলা ভোটকর্মী ভোটগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য ছিল একজন জুনিয়ার কনস্টেবল এবং একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। ভোট কর্মীরা জানান, বেলা ১১ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল। তখন প্রায় ২০০ ভোট হয়ে গিয়েছিল। তারপরেই একদল দুষ্কৃতী মুখে কাপড় বেঁধে লাঠি হাতে ভিতরে ঢুকে ব্যালট কেড়ে নিয়ে স্ট্যাম্প মেরে বক্সে ঢোকাতে শুরু করে।
Advertisment
এরকম কিছুক্ষণ চলার পর আরও কিছু দুষ্কৃতী ভিতরে ঢুকে ব্যালট বাক্স কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। বুথের ভিতর তাণ্ডব চালায়। অঙ্গনা শেঠ বলেন, 'আমাদের মহিলা পরিচালিত বুথ হলেও ছিল না পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। একপ্রকার আমাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। দুষ্কৃতীরা আমাদেরও মারতে উদ্যত হয়। জুনিয়র কনস্টেবল এবং সিভিক নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত ছিলেন। বাইরে তখন ধুন্ধুমার চলছে। দাউদাউ করে জ্বলছে দুটি মোটর বাইক।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, 'বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এখানে মোটরবাইক নিয়ে ভোট লুঠ করতে এসেছিল। এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষই তাদের মোটরবাইক জ্বালিয়ে দিয়েছে।' ঘটনার পর থেকে মহিলা ভোটকর্মীদের চোখমুখে আতঙ্কের চাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বেঁচে ফিরেছেন, এজন্য তাঁরা এখন ভগবানকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। কারণ, পুলিশকে খবর দেওয়ার পরও দীর্ঘক্ষণ পুলিশের দেখা মেলেনি। আর, তাই চাকরি চলে গেলেও তাঁরা যে ভোট প্রক্রিয়ায় আর অংশগ্রহণ করবেন না, সেটা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন বীরভূমের এই মহিলা পরিচালিত বুথের কর্মীরা।