তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের আশ্বাসে মঙ্গলবার কলকাতার ধর্মতলা থেকে ধরনা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলেন ২০০৯ সালের দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। নিয়োগের দাবিতে বিগত ৩৭ দিন ধরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
সোমবার কুণাল ঘোষের সঙ্গে কথা হয় ২০০৯ সালের দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের এক প্রতিনিধি দলের। আদালতে মামলাটির দ্রুত শুনানি ও তারপর নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের জলদি পদক্ষেপের দাবি ছিল আন্দোলনকারীদের। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফে কুণাল ঘোষ আন্দোলনকারীদের সেই দাবিতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। ২০০৯ সালের নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম নিয়ে মামলার শুনানি শেষ হলেও আদালতে রায় দান স্থগিত রয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার সেই মামলারই শুনানি রয়েছে। তার আগে রাজ্য সরকারের উপর আস্থা রেখে ধর্মতলা থেকে এ দিন ধরনা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দক্ষিণ ২৪ পরগনার আন্দোলনকারীরা।
কুণাল ঘোষ সোমারই বলেছিলেন, 'বাম জমানার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রাথমিকে নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। কোনও একটি মহলের উস্কানিতে ওদের নিয়োগ আটকে রাখছে। বিকাশ রঢ্জন ভট্টাচার্যদের অন্য ক্ষেত্রে দরদ থাকলেও এ ক্ষেত্রে আর দেখা যাচ্ছে না। কারণ এটা ২০০৯ সালের নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম। আদালতে শুনানি শেষ হলেও রায় দান স্থগিত রয়েছে। সমস্যার সমাধানেরাজ্য সরকার ও আমি ওদের পাশে আছি। পর্যদ সভাপতিও ওঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল। আশা করছি জট দ্রুত মিটবে।'
নিয়োগ প্রার্থীদের দাবি, তাদের দাবি মেনেই চাকরি দেওয়া হবে বলে কুণাল ঘোষ আশ্বস্ত করেছেন। তারপরই ধরনা তুলে নেওয়া হয়েছে।
২০০৯ সালে প্রথামিকে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০১০ সালে পরীক্ষা হয়। ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদল ঘটে। তৃণমূল আসে ক্ষমতায়। সরকার বদলের পর সেই ২০১০ সালের নিয়োগ প্যানেল বাতিল করা হয়। ২০১২ সালে ফের পরীক্ষা হয়। অভিযোগ যে, এর পর সব জেলার ক্ষেত্রে প্রাথমিকের নিয়োগ হলেও, বাদ ছিল শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা। তাই ন্যায্য চাকরির দাবিতে চলতি বছরের দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীরা ধর্মতলায় ধরনা শুরু করেন।
২০০৯ সালে প্রাথমিকে চাকরির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক ছিল না। কেউ কেউ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, আগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চাকরি দেওয়া হোক। সেই মর্মে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ওই মামলা এখনও চলছে।