প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবারই সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতিতে প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সরিয়ে দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সিবিআই অফিসারকে। ওই দায়িত্বে কাকে আনা হবে তা জানতে চেয়ে বিকল্প তিনটি নাম কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার থেকে চেয়েছিলেন বিচারপতি। বুধবার বিকল্প না নিয়ে আদালতে যায় সিবিআই। শুনানিতে সিবিআই জানায়, দুর্নীতি মামলায় ধৃত এক প্রভাবশালীর কাছ থেকে দু’টি পাসপোর্ট মিলেছে। তখন বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই ব্যক্তি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত অপসারিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য কিনা তা জানতে চান বিচারপতি। উত্তরে 'হ্যাঁ' বলে জানায় সিবিআইয়ের আইনজীবী।
এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'অত্যন্ত লজ্জার। এখনও মানিক ভট্টাচার্য বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেনি। তিনি ভাবছেন আবার ফিরে আসবেন।' মানিক সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য তিনি নিজেও জানেন বলে দাবি করেন বিতারপতি। তাঁর কথায় উঠে আসে মানিক ভট্টাচার্যের লন্ডনের বাড়ির প্রসঙ্গ। মানিক কতবার লন্ড গিয়েছেন? তাঁর বাড়ির পাশে কোন হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতার বাড়ি? তা সিবিআইয়ের আইনজীবীর থেকে জানতে চান বিচারপতি। সঙ্গে দাবি করেন, এসবের উত্তর তাঁর জানা।
একইসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'দিদি একা আর সামলাতে পারছেন না। চারপাশে এত দুর্বৃত্ত থাকলে তিনি সামলাবেন কী করে? সম্ভব নয়। সবাই জানে।' এ প্রসঙ্গেই ভূপেন হাজারিকার গান 'হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচ সিকার ছাগলে'স্মরণ করে তিনি।
'দিদি' বলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কাকে বোধাতে চাইলেন? তা খোলসা করেননি তিনি। উল্লেখ্য, এরাজ্যে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'দিদি' বলে সম্বোধন করে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীও
বিভিন্ন হেভিওয়েট সেলিব্রেটির 'দিদি' বলেই পরিচিত।
এপ্রসঙ্গে আইনজীবী তথা সিপিআইএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, 'বিচারপতির কাছে নিশ্চই তেমন তথ্য রয়েছে তাই তিনি বলেছেন। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। আমার শুধু ওঁর সঙ্গে দ্বিমত যে, মমতা নিজেই দুর্বৃত্ত। মমতার পাশে দুর্বৃত্ত রয়েছে এই ধারণাটা ভুল। তিনিই সব দুর্বৃত্তের নায়িকা ও গোটা রাজ্যে দৃর্বৃত্তায়ণের পরিকল্পনা তাঁরই।'