RG Kar doctor rape murder case: আরজি কর কাণ্ডে গর্জে উঠেছে বাংলা। রাস্তায় নেমে বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ। দিকে দিকে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। ইতিমধ্যে অনেক স্কুলকে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়ায় শো'কজ নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই দমে থাকেনি এই প্রতিবাদ। বরং বেড়েছে প্রতিবাদের ঝাঁঝ। এর মাঝে হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বুকে কাঁপুনি ধরানোর বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। শিক্ষিকার এই বক্তব্যকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সমাজের সকল স্তরের মানুষ।
সরকারি কর্মচারী হয়েও নির্ভয়ে তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার ডাক দিয়েছেন পাশাপাশি তিনি তাঁর স্কুলের ছাত্রীদের আগামী দিনে মুখ বুজে না থেকে সমাজের সকল নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ানো বার্তা দিয়েছেন। শিক্ষিকার এহেন অনুপ্রেরণা মূলক বক্তব্যে মন্ত্রমুগ্ধ সকলে। ঠিক কী বলেছেন তিনি? সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষিকার যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে ওই শিক্ষিকাকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'এটা আমার কাছে খুবই আনন্দের তোমরা নিজেরা আমাকে চিঠি করে জানিয়েছো তোমরা বাংলা জুড়ে চলা প্রতিবাদে সামিল হতে চাও। আমরা সরকারি চাকরি করি। অনেক সময় অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। আজ যে পুলিশরা তোমাদের পাশে এগিয়ে এসেছে গতকাল পর্যন্ত ৩ বার চিঠি করেও মেলেনি অনুমতি। এটা ওদের দোষ নয়। আসলে ওই পোশাকটার কিছু নিয়ম আছে। কিন্তু আজকে ওঁরা এসেছেন পোশাকের নিচে থাকা মনুষ্যত্ব আছে সেটার টানে। অফিসিয়ালি কোনও অনুমতি আমরা পাইনি। আর আমরাও ঠিক করেছিলাম যে যদি জেলে ঢুকতেই হয় তাহলে রাস্তায় নেমেই ঢুকব। ঘরে বসে থাকব না।'
এর পাশাপাশি তিনি সম্প্রতি সরকারের আনা রাত্তিতের কর্মসূচী প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের নাইট ডিউটি না দেওয়ার বিষয়েও সুর চড়িয়ে বলেন, 'মহিলাদের রাতে বেরোতে না দিলে তাদের ঘরে বন্ধ করে রাখলে কোন সমস্যার সমাধান হবে। কত মহিলারা আছেন যারা রাতে ডিউটি করেন, কত আয়া দিদিরা আছেন যারা রাত্রে হাসপাতালে ডিউটি করেন, প্রতি ক্ষেত্রে মহিলারা নাইট ডিউটি করছেন। তাদের ঘরে আটকে রেখে সমস্যার কোন সমাধান হবে না'। তিনি এও বলেন, 'একটা ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের হাত থেকে রাষ্ট্র রক্ষা করতে না পারলে একটা ১২ বছর বয়সী মেয়ের মতামতকেও আমাদের সম্মান দিতে হবে। রাষ্ট্র যখন ভেঙে পড়ে তখন ১৮ বছরের নীচে মানুষদেরত সিদ্ধান্ত নিতে হবে'। তিনি স্কুলের ছাত্রীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এর জন্য হিল্লি-দিল্লি নয়! বাড়ি থেকেই স্কুল হোক প্রতিবাদ'।
আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন নিয়ে এখনও আগুনে পরিস্থিতি দিকে দিকে। নির্যাতিতার মর্মান্তিক পরিণতির বিচার চেয়ে রোজ পথে নেমে গলা ফাটাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন। এবার নির্যাতিতার মা-বাবাও আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন। CBI-ও আরজি কর কাণ্ডে তদন্তের গতি বাড়িয়েছে। রবিবারই টানা ১২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ম্যারাথন তল্লাশি চলে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে। গতকাল সাতসকালে সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, সন্দীপের বাড়ি থেকে বহু নথিপত্র নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে গতকাল সন্দীপ ঘোষের বাড়ি-সহ কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার মোট ১৫টি জায়গায় হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। আজ সোমবার ফের সিজিও কমপ্লেক্সে প্রাক্তন অধ্যক্ষকে ডেকে ম্যারাথন জেরা শুরু করেছে সিবিআই আধিকারিকরা।