বাস-মিনিবাস তিন মাসে ১৫ হাজার টাকা করে পাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে, শুক্রবার এমনই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এদিন কলকাতার ৩১টি রুটের বাসমালিকদের সংগঠনের বৈঠকে মাত্র একজন সদস্য রাজ্য সরকারের সাহায্য নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। বাকি ৩০টি রুটের প্রতিনিধিরা সম্মত নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সোমবার পরিবহণ দফতরে জানিয়ে দেবে তাঁরা সরকারি সাহায্য নেবে না এবং ফের বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দেবে সরকারকে। তাঁরা মনে করেন, একমাত্র বাসের ভাড়া বাড়িয়েই সমস্যা সুরাহা সম্ভব। তাছাড়া অন্য বাস মালিকদের সংগঠনও মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি হননি বলে খবর।
টাকা না নেওয়ার কারণ কী? সরকারের দেওয়া ১৫ হাজার টাকায় কিছু হবে না বলেই মনে করেন বাসমালিকরা। ওয়েস্ট বেঙ্গ বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বসু বলেন, "শ্রমিকদের ২৪ শতাংশ কমিশন দিতে হবে মাসে ৩৬০০টাকা। পুলিশ কেসের জন্য দিতে হয় প্রতিদিন ৩০০টাকা। আমাদের কী থাকবে? তার জন্যই ১৫ হাজার টাকা নিচ্ছি না। তাছাড়া আমরা মনে করি ভাড়া বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই। যতদিন পারব পুরনো ভাড়ায় পরিষেবা দিয়ে যাব। যখন পারব না বন্ধ রাখতে হবে। ভাড়া না বাড়িয়ে পরিষেবা সচল রাখা যাবে না। সরকারি বাসে যা ভাড়া আছে তাই করুক। রেগুলারিটি কমিটিকে প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।" তিনি জানান, কলকাতা শহরে ৬০০০ বাস চলত। এখন ৫ থেকে ১০ শতাংশ বাস চলছে। বেশিরভাগ রুটেই বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট এবং অল বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতি মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি নয়। সিন্ডিকেটের সদস্যরা রবিবার বৈঠকে বসবেন। সেখানেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সংগঠনের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "রবিবার বৈঠক করব। মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার কথা বলছেন। তাহলে জেলার গাড়িগুলি কীসে চলবে? সেগুলি তো জলে চলবে না। শুধু কলকাতা ভাবলে হবে না। সারা রাজ্যে ৪৫ হাজার গাড়ি রয়েছে। টোটাল প্যাকেজ ঘোষণা করুক তারপর পর্যালোচনা করব। এখন ডিজেলেই বাড়তি লাগছে ৭০০টাকা।" অল বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এভাবে সমস্যার সাময়িক সমাধান হতে পারে না। সংখ্যাটা বেঁধে দিয়েছেন। ভাড়া বৃদ্ধি না করে বিকল্প পদ্ধতি দিয়েছেন। ২৭ হাজার বাসের কর্মী ও মালিকদের পরিবার-পরিজনদের রুটি-রুজির কথা ভাবতে হবে। এটা খুশির ব্যাপার নয়। পরিবহণ শিল্পের একটা বড় অংশ কী করবে?"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন