কৃত্তিকা পালের আত্মহত্যার পর শুধু স্কুল নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বারবার। কোনো ছাত্রছাত্রী মানসিক অবসাদে ভুগলে, তার সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে স্কুলের শিক্ষকদের। সে কারণেই স্কুলের ডায়েরিতে একটি বাড়তি কলাম রাখার প্রস্তাব নিয়ে এল রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন।
পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, "আমরা জানতে পেরেছি, দক্ষিণ কলকাতার নামী স্কুলের যে ছাত্রীটি আত্মহত্যা করে, সে মানসিক অবসাদে ভুগত, যা স্কুলের কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকা জানতেন না। যদি স্কুল থেকে জানত তাহলে ওকে হয়ত কাউন্সেলিং করার সুবিধা হতো, বা ওর দিকে বাড়তি নজর দেওয়া সম্ভব হতো। তাই স্কুল ডায়েরিতে একটা বাড়তি কলাম রাখার প্রস্তাব স্কুল শিক্ষা দফতরকে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: ছত্রে ছত্রে মিল! কৃত্তিকার আত্মহত্যায় কাঠগড়ায় এই ওয়েব সিরিজ
কীভাবে এই কলাম কার্যকরি করা হবে? অনন্যা বলেন, "স্কুলের ডায়েরিতে ঠিক যেমন নাম, অবিভাবকের নাম, রক্তের গ্রুপ, ফোন নম্বর সহ আরও নানান বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়, ঠিক তেমনই আরেকটা কলাম করা হবে, যেখানে মনের স্বাস্থ্য কেমন বা কোনো মানসিক রোগ আছে কিনা, সেই সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। ডায়েরির কলাম পূরণ করবেন অভিভাবকরা, তাহলে শিক্ষক শিক্ষিকারা বাড়তি নজর রাখতে পারবেন পড়ুয়ার ওপর। একইসঙ্গে তাকে কাউন্সেল করে সঠিক পথে নিয়ে আসতে সুবিধা হবে।"
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়ম কার্যকর করার প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতরকে। সরকারি স্কুলেই শুধু নয়, পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলেও এই নিয়ম চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই বিষয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশনের সঙ্গে স্কুল শিক্ষা দফতরের আলোচনা ইতিবাচক।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের শুক্রবার স্কুলের শৌচাগারে আত্মহত্যা করে জি ডি বিড়লা স্কুলের দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী কৃত্তিকা। বাঁ হাতের কব্জি কাটা এবং মুখে প্লাস্টিক জড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। সেখানেই পাওয়া যায় কৃত্তিকার হাতে লেখা সুইসাইড নোট। যা পড়ে বোঝা যায়, মানসিক অবসাদে ভুগছিল সে।