Advertisment

"সম্মান আর নিরাপত্তা যে কোনও পেশার ন্যূনতম অধিকার"

ডাক্তারদের আন্দোলন এখন সর্ব ভারতীয় আকার ধারণ করেছে। গত তিন দিনে কলকাতা এবং সংলগ্ন অঞ্চলের সরকারি হাসপাতাল থেকে শয়ে শয়ে সিনিয়র চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ডঃ রুবেন বসু

এনআরএসকাণ্ডে উত্তাল সারা দেশ। নীলরতন সরকার হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির আজ সপ্তম দিন। ডাক্তারদের আন্দোলন এখন সর্ব ভারতীয় আকার ধারণ করেছে। গত তিন দিনে কলকাতা এবং সংলগ্ন অঞ্চলের সরকারি হাসপাতাল থেকে শয়ে শয়ে সিনিয়র চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবি ন্যায্য, মনে করেছেন ডঃ রুবেন বসু। সানডে এক্সপ্রেসকে তিনি জানালেন গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

Advertisment

"তারাতলায় আমার ক্লিনিকের উল্টো দিকে একটা বস্তি রয়েছে। সেখানকার একটি ছেলে ডেঙ্গুতে ভুগছিল। জ্বর বাড়াবাড়ি রকম হওয়ায় আরোগ্য নার্সিং হোমে ভর্তি হয়। আমিই দেখছিলাম। দিন কয়েকের মধ্যেই ছেলেটির শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা শুরু হয়। ছেলেটির বাবা মায়ের অনুমতি নিয়েই আমি অন্য কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিই। দেখা যায় শৈশব থেকেই ছেলেটির হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে। রোগীকে আইসিইউতে শিফট করা হয়। বাবা মা রাজি হয়ে যান। এবার আইসিইউতে ছেলেটি একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তারপর আমার কাছে হুমকি দিয়ে রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীদের থেকে ফোন আসতে থাকে। এবং ছেলেটির অভিভাবককে তারপর থেকে আর দেখাই গেল না। ক্ষুব্ধ জনতা আমার গাড়ির ওপর হামলা চালাল", বললেন ডঃ বসু।

" width="640" height="360" allowfullscreen="allowfullscreen" data-mce-fragment="1">

"ছেলেটির আইসিইউতেই মৃত্যু হয়, নিয়ম মেনে আরএমও ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিলেন। হঠাৎ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আমায় ফোন করে জানাল মৃতের আত্মীয়রা হাসপাতালে এসে বিক্ষোভ করছেন, যাতে আমি ডেঙ্গুর কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এই মর্মে ডেথ সার্টিফিকেট দিই। আমি তা করতে অস্বীকার করি, কারণ ম্ত্যু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হয়েছে, এবং সেটি আমার বিষয় নয়"। এবার আমাকে খুনের হুমকি দেওয়া হল। তারপর আমি পুলিশের সাহায্য নিই। নিউ আলিপুর থানা থেকে আমাকে পরামর্শ দেওয়া হয় আমি যেন কয়েক দিন চেম্বারে না যাই। মিডিয়াও আমাকেই দোষ দিয়েছিল। কিন্তু আমি চেম্বারে গিয়েই পরিস্থিতির সামনা করতে চেয়েছিলাম"।

কেমন আছেন জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়?

"চেম্বারে রোগী দেখছিলাম, সেই সময় আমার চেম্বারে ঢুকে একদল লোক সব তছনছ করে দেয়। পুলিশ নির্বাক দর্শকের ভূমিকা নেয়। লালাবাজার থেকে র‍্যাফ ডাকা হয়েছিল। বছর পঁচিশের এক মহিলা তখন আমাকে লক্ষ্য করে কাঁচের টুকরো ছুড়ছেন। আমার কবজিতে কাঁচ ঢুকে ঝরঝর করে রক্তপাত হচ্ছে। তারপরেও চলল শারীরিক নিগ্রহ"।

Kolkata, Kolkata news, bengal doctors' strike, west bengal violence, west bengal doctors, kolkata doctors, doctors protest, doctors strike, indian express news এনআরএসকাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তার দাবিতে নাগরিক সমাজের মিছিল। ছবি-শশী ঘোষ

"আমার বাড়িতে ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা আছেন। তাঁর নিরাপত্তাটুকু সুনিশ্চিত করতে পারেনি। আমাকে বাঙ্গুর হাসপাতালে শিফট করে ১৮ টা সেলাই করা হয়, অ্যানাস্থেশিয়া ছাড়া। সে সময় অ্যানাস্থেশিস্ট পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর আমার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগও আনা হয়। দুষ্কৃতীরা এক দিন মাত্র লক আপে রাত কাটিয়ে পরদিন ছাড়া পেয়ে যায়। ডাক্তাররা একদিনের ঘটনায় বিদ্রোহ করেনি, বছরের পর বছর ধরে যা হয়ে আসছে, তার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন। আর শুধু চিকিৎসকদের নয়, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রয়োজন নার্স সহ চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সবার। যে কোনও কাজ করার জন্য সম্মান এবং নিরাপত্তা ন্যূনতম শর্ত", বললেন ডঃ রুবেন বসু।

Read the full story in English

NRS
Advertisment