সকাল থেকেই ভুবনেশ্বর এইমস চত্বরজুড়ে কড়া নিরাপত্তার আয়োজন। এর মধ্যেই সকাল ১০টার কিছু পরে হাসপাতালে পৌঁছায় বাংলার ধৃত মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অ্যাম্বুলেন্স। যা দেখেই ভিড় জমে যায়। এরপরই হুলস্থূলকাণ্ড।
এইমসের মধ্যে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানো হয় অর্থিক তছরুপের অভিযোগে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। হুইলচেয়ারে বসানো হয়। মাথায় সাদা তোয়ালে মোড়া মমতা মন্ত্রিসভার শিল্প, বাণিজ্য ও পরিষদীয়মন্ত্রীর।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখেই বহু মানুষ তাঁর নিরাপত্তা বলয়ের চারধারে জড়ো হয়ে যান। এদের বেশিরভাগই বাঙালি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভুবনেশ্বর এইমসে গিয়ে চিকিৎসারত রোগী বা তাদের আত্মীয়। রাজ্যের মন্ত্রীকে দেখেই বিক্ষোভ শুরু করেন এইসব বাঙালিরা। 'চোর, চোর, ধান্দাবাজ' বলে স্লোগানও ওঠে।
আরও পড়ুন- শরীরের ঠিক কোথায় সমস্যা পার্থর? বুঝতে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি AIIMS-এর
পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে পারে দেখেই নিরাপত্তারক্ষীরা উত্তেজিতদের হাসপাতাল চত্বরের শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রাখার পরামর্শ দেন। এরমধ্যেই দ্রুত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হাসপাতালের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেন এই বিক্ষোভ? এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'আমি বেকার। আমাদের প্রতারণা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেকারদের জ্বালা আমি বুঝি। ওনার অর্থের লোভের জন্য হাজার হাজার মানুষ আজ ন্যায্য চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওকে জেলে ভরা উচিত।'
আরেক বিক্ষোভকারীর কথায়, 'বাংলায় শিল্প নেই। আর সরকার মেলা, খেলা করছে। মন্ত্রীগুলো টাকা নিয়ে দুর্নীতি করছে। মহিলা নিয়ে নানা কীর্তির কথা ফাঁস হচ্ছে। এদের রেয়াত করা উচিত নয়।' অন্য একজনের কথায়, 'কেন্দ্রের আয়ুষ্মান প্রকল্প বাংলার কেউ পায় না। মেদিনীপুর থেকে ভুবনেশ্বের এসে মায়ের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসাথী শুধু নামেই, কোনও সুবিধা নেই। কেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসা স্বাস্থ্য সাথীতে করান হল না?'
আরও পড়ুন- ‘এদিক ওদিক ছড়িয়ে বান্ধবীরা’, পার্থকে নিয়ে বিস্ফোরক চিরঞ্জিত
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সোমবার সকালে এসএসকেএম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় ইডির হাতে ধৃত তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সেখান থেকেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ভুবনেশ্বরে। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এইমসে। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর পর হুইল চেয়ারে বসিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এইমসের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শারীরিক নানা পরীক্ষা হবে। পার্থর চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে চার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিশেষ দল। বিকেল ৩টের মধ্যে মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট দিতে হবে বলে সময়ও বেঁধে দিয়েছে হাই কোর্ট।