Deadbody carrying vehicle: অন্তিম যাত্রার সাক্ষী থেকে দৃষ্টান্ত গড়লেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। সমাজের 'টিপ্পনীকে' উড়িয়ে মানুষের জন্য বিশেষ করে সমাজের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে এ এক অনন্য প্রয়াস বড়জোড়ার পূজা মণ্ডলের।
আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই পড়াশুনা, নাচ-গান-আঁকার প্রতি দারুণ ঝোঁক পূজার। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশ্যাল ওয়ার্কে মাস্টার্স করছেন তিনি। এসব নিয়েই বেশ ছিলেন। কিন্তু করোনা কালীন সময়ে পূজার দৃষ্টিভঙ্গিতে আসে বিরাট বদল।
শববাহী গাড়ি থাকলেও সেই গাড়ি চালানোর জন্য চালক খুঁজে না পাওয়ায় নিজেও কাঁধে তুলে নেন গুরুদায়িত্ব। সেই থেকে শববাহী গাড়ি চালিয়ে সমাজের সামনে এক 'প্রতীকী প্রতিবাদ' গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন পূজা।
স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনার পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচার এবং সমাজ সেবা তাঁর কাছে যেন নেশা। নিজের কাজের মধ্যে দিয়ে সকলের থেকে আলাদা হওয়ার খিদে তাঁকে যেন তাড়া করে বেড়াত। কিন্তু সুযোগটা হঠাৎ করেই আসে তিন বছর আগে।
'বড়জোড়া ব্লক ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন' নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে সেসময় যুক্ত হন পূজা। ২০১৪ সালে তৎকালীন সাংসদের সাংসদ তহবিল থেকে কেনা হয় এই শববাহী গাড়ি। গাড়িটি কেনা হলেও চালক না পাওয়ার কারণে গাড়িটিকে সেভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।
এরপরই ড্রাইভিং শিখে শবদেহ বাহী গাড়ির চালকের ভূমিকায় দেখা যায় পূজাকে। আসানসোল বিবি কলেজ থেকে প্রাণীবিদ্যায় স্নাতক বর্তমানে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়ার্ক নিয়ে মাস্টার্স করা পূজা এপ্রসঙ্গে বলেন, " অনেকের কাছে শববাহী গাড়ি মানেই অপবিত্র নয়। আর পাঁচটা সাধারণ গাড়ির মতোই এটাও একটা গাড়ি। মূলত সমাজে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে এবং শববাহী গাড়ি চালানোর মাধ্যমে আমি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির উপর আমার "প্রতীকী প্রতিবাদ জারি রেখেছি"।
এদিকে শহরের বুকে বছর ২১-র তরুণীকে শববাহী গাড়ি চালাতে দেখে সকলেই বেশ কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে তাকান পূজার দিকে। পূজা বলেন, 'কে কী ভাবেন তাতে কিছুই আসে যায় না। আমি আমার সামনের লক্ষ্যকে স্থির রেখে কাজ করে যাচ্ছি, এটাই আমার বড় তৃপ্তি'।