রথযাত্রার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর দিন গোনা। কিন্তু এবার সেই খুশির আমেজে বাদ সাধছে বিতর্ক। এবছর থেকে রাস্তা আটকে পুজো করা যাবে না। নবান্নের এই নির্দেশ নিয়েই সৃষ্টি বিতর্কের। দুর্গাপুজোর বাকি আর তিন মাস। তার আগে এই নির্দেশে অনেকটাই চিন্তায় পড়েছে শহরের বড় বড় পুজো কমিটি। নবান্ন সূত্রে খবর, বিগত কয়েক বছরে রাস্তা বন্ধ করে পুজো করা নিয়ে শহর ও শহরতলী থেকে একাধিক অভিযোগ আসে নবান্নে। অভিযোগে বলা হয়েছে, এভাবে পুজোর আয়োজন করার ফলে অসুবিধায় পড়েন সাধারণ মানুষ। তাই কড়া নির্দেশ নবান্নের, কোনওভাবেই রাস্তা বন্ধ রেখে মানুষকে সমস্যায় ফেলা যাবে না।
সূত্রের খবর, নবান্নের এই নির্দেশ রাজ্যের সব থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও কলকাতার মতো রাজ্যের অন্যত্র রাস্তা আটকে দুর্গাপুজোর সংখ্যা তেমন বেশি নয়। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে পুজোর সময় এবং তার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই নানা কারণে রাস্তায় যাতায়াতের অসুবিধা হয়। এবার সাধারণ মানুষের অসুবিধা ও যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে পুজোর অনুমতি দেবে না প্রশাসন।
একডালিয়া পুজো কমিটির উদ্যোক্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই নিয়ম বোধহয় পুরনো পুজোগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। নতুন পুজোর উদ্যোক্তাদের জন্য প্রযোজ্য। যাতে রাস্তা ছেড়ে পুজো করতে হবে। রাস্তা জুড়ে করলে লোকের অসুবিধা হয়।"
নবান্নের এই নির্দেশের বিরোধিতা করছে বিজেপি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, "প্রত্যেক সপ্তাহে নামাজ হচ্ছে রাস্তা বন্ধ করে। দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে কী অসুবিধা আছে? সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলা হচ্ছে। তাহলে আইন সবার জন্য এক হোক। একটা সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ কেন?"
নবান্নের এই নির্দেশিকায় ফাঁপরে পড়েছেন শহরের পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। নলিন সরকার স্ট্রিট পুজো কমিটির কর্তা সিদ্ধার্থ সান্যাল বলেন, "নির্দেশিকা পড়েছি। ফোরাম ফর দুর্গা উৎসবে এই বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উত্তর কলকাতায় বেশিরভাগ পুজো রাস্তাতেই হয়। চারিদিকে চার ফুট ছাড় দিয়ে মন্ডপ হয়। কিন্তু তাতে গাড়ি যাতায়াত করতে পারে না। দেখা যাক, সরকার শিথিলতা আনে কি না। তবে এক্ষেত্রে সবাই ভুক্তভোগী হব।"