আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনা। চারিদিকে শুধুই পুজো পুজো গন্ধ। শেষ মুহূর্তের জোরদার প্রস্তুতি চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। কলকাতার দুর্গাপুজো মানেই সেরা চমক। শিল্পীরা তাদের সেরা শিল্পভাবনাকে শেষ পর্যায়ে ফুটিয়ে তুলতে দিনরাত নাওয়া-খাওয়া ভুলে এক করেছেন। শহরবাসী তৈরি উৎসবের আনন্দে একেবারে চেটেপুটে উপভোগ করতে।
কলকাতার দুর্গাপুজো এখন দেশ-কালের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশ-বিঁভুইয়েও নজর কাড়ছে। বিদেশের মাটিতেও প্রবাসী বাঙালিরা মেতে ওঠেন শারদোৎসবে। কুমোরটুলি থেকে দুর্গা প্রতিমা যায় সাতসমুদ্র পেরিয়ে। গত বছরই বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। ইউনেস্কোর ইনট্যানিজবল কালচারাল হেরিটেজের মর্যাদা পেয়েছে বাংলার দুর্গাপুজো। সেকথা মাথায় রেখেই মাতৃবন্দনায় ‘নজরকাড়া’ থিমে দর্শকদের চমকে দিতে তৈরি শহর কলকাতা।
উত্তর কলকাতার নামজাদা ও পুরনো পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। এবারের পুজোর থিমে স্থান করে নিয়েছে রাঢ় বাংলার ঘরের মেয়েদের জীবন সংগ্রামের কাহিনী। এ বছরের তাদের ভাবনা ‘প্রান্তজনের আত্মকথন’। শিল্পী গোপাল পোদ্দার জানিয়েছেন, “ ঠোঙার তৈরি পুজো মণ্ডপে ফুটে উঠবে প্রান্তিক মহিলাদের জীবন সংগ্রামের চিত্র। স্বল্প বাজেটে প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমাদের এই অভিনব ভাবনা”।
শিল্পী গোপাল পোদ্দার আরও জানিয়েছেন, “সীমান্ত বাংলার লোক জীবন ও লোক উৎসবের সুরের সঙ্গে দুর্গাপুজোর এই চিরাচরিত সুর অতীত থেকেই মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। যে সকল মানুষরা রয়েছেন আলোর বৃত্ত থেকে দূরে সেই সব প্রান্তিক মানুষের টিকে থাকার লড়াই অদম্য জেদ আর স্বপ্ন উড়ানের গল্পই এবারের আমাদের ভাবনা। থিমের মাধ্যমে রাঢ় বাংলার টুসু পার্বনকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে সমগ্র কাঠামোর মাধ্যমে”।
এবারের পুজোর থিম সং-য়ের দায়িত্বে রয়েছেন পণ্ডিত তন্ময় বোস। আলোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিখ্যাত আলোক শিল্পী দিনেশ পোদ্দার। সেই সঙ্গে প্রতিমা তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন প্রবাদ প্রতিম মৃৎ শিল্পী প্রদীপ রুদ্র পাল।