এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও এনআইএ-কে ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হলে তাতেও তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলে স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবার ও জখমদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এগরার খাদিকুল গ্রামে বেআইনি বাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তড়িঘড়ি ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে এদিন জানিয়েছেন, বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর আগেও বেআইনি বাজি কারখানার মালিককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। এক্ষেত্রেও তাই করা হবে।
একইসঙ্গে বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবার পিছু আড়াই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিস্ফোরণে আশঙ্কাজনকদের ১ লক্ষ টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে এদিন ঘটনার পর এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একদিকে পুলিশকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ। তেমনই তৃণমূল বিধায়ককেও এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন, ''বিস্ফোরণের পরেই ওড়িশার দিকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
আগেও বেআইনি ওই বাজি কারখানার মালিককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। জামিন পেয়ে বেড়িয়ে ফের বেআইনি বাজি তৈরি করছিল। বাজি কারখানার মালিক ওড়িশা কেন যেখানেই পালাক আমরা টেনে আনব। এখান থেকে বাজি তৈরি করে ওড়িশায় বিক্রি হয়। আমি তো শুনেছি উনি বাংলাদেশ, ওড়িশায় সাপ্লাই করে।'' এদিকে, বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্ত দাবি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''যাঁরা এনআইএ বলে চিৎকার করছে, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমাদের কেউ এতে জড়িত নয়। এনআইএ হলে যেন আসল অপরাধী ধরা পড়ে।''
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এগরার খাদিকুল গ্রাম। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। মুহূর্তে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। বাড়ি ছেড়ে সবাই রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন। পড়ে দেখা যায়, এলাকারই একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়রা দেখেন সেখানে বেশ কয়েকটি দেহ ও দেহাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যান অনেকে।
আরও পড়ুন- কমল বাতিল শিক্ষকের সংখ্যা! রায় সংশোধন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেটিরও কাঠামো ছাড়া বাকি সবটাই কার্যত উড়ে গিয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ওই বাড়িটির দেওয়ালের একাংশ ভেঙে পড়েছে। খবর পেয়ে দমকল ও পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। বিস্ফোরণের জেরে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ অবস্থায় আরও ৫ জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এলাকায় বেশ কয়েকটি বাজি কারখানা থাকলেও তাদের উপর পুলিশের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সেখানে কোন ধরনের বাজি তৈরি হচ্ছে সেপব্যাপারেও নজরদারি চালানো হয় না। এদিন ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। পুলিশকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।