Box Crab Technology: গ্রামের আটপৌরে গৃহবধূর এমন নজিরবিহীন কীর্তি এখন এলাকায় শোরগোল ফেলে দিয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছাশক্তিকে সঙ্গী করেই আজ মোটা টাকা আয়ের (Income) পথ দেখেছেন এই মহিলা। নিজে সাবলম্বী তো হয়েইছেন, তাঁর অনন্য এই কীর্তির কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামের অন্য মেয়ে-বধূরাও এই ব্যবসায় সামিল হওয়ার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন। শুধু মেয়েরাই নয়, গ্রামের অনেক বেকার যুবকও এই ব্যবসা শুরুর ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের চরকেন্দেমারী গ্রাম। এই গ্রামেরই বাসিন্দা তপশিলি জাতিভুক্ত গৃহবধূ অতসী মাইতি। অতসী তাঁর বাড়ির পুকুরে ভাসমান বাক্সে কাঁকড়া চাষ (Crab Farming) করছেন। আধুনিক প্রযুক্তিতে এই চাষে বিপুল আয়ের মুখ দেখছেন তিনি। তাঁ চাষের কাঁকড়া (Crab) রফতানি (Export) হচ্ছে চিন (China), সিঙ্গাপুর (Singapore), আমেরিকা (America) মতো দেশে।
মাধ্যমিক পাশ করা এই মহিলা শুধুমাত্র নিজের অদম্য জেদকে সঙ্গী করেই সাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন। বাড়ির কাজের সঙ্গেই লাগোয়া পুকুরে অভিনব কায়দায় তিনি করছেন কাঁকড়ার চাষ। আধুনিক এই পদ্ধতির নাম 'বক্স ক্র্যাব টেকনোলজি' (Box Crab Technology) ।
এভাবেই বাড়ির পুকুরে কাঁকড়া চাষ করছেন অতসী মাইতি।
অতসী মাইতির কথায়, "বক্স ক্র্যাব টেকনোলজিতে কাঁকড়ার চাষ অত্যন্ত লাভজনক। এর কারণও আছে অনেক। প্রথমত একই পুকুরে মাছ চাষের সঙ্গেই ভাসমান বাক্সে কাঁকড়ার চাষে লাভ দ্বিগুণ হচ্ছে।" সম্প্রতি দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) ক্যাম্পে “মৎস্যজীবী নিবন্ধীকরন” প্রকল্পে নাম লিখিয়েছেন অতসী। ব্লক মৎস্য দফতরের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেন তিনি। তাঁর এই চাষে ব্লকের মৎস্য আধিকারিকও সবধরনের সহায়তা করেন বলে জানিয়েছেন এই মহিলা।
চাষের কাঁকড়া।
নন্দীগ্রাম (Nandigram) ১ ব্লকের মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, “অতসী মাইতি এক অন্যন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন। যা অন্যন্য গৃহবধূদের উৎসাহিত করবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করার পাশাপাশি বিকল্প উপার্জনের পথ দেখাচ্ছে বাক্স পদ্ধতিতে কাঁকড়ার চাষ। প্রতিটি বাক্সে একটি করে কাঁকড়া থাকায় একে অপরকে আক্রমণ করতে পারে না।"
আরও পড়ুন- Premium: নামী দামী বেসরকারি স্কুলও ভাবতেই পারবে না! তাকলাগানো কীর্তি বাংলার এই সরকারি স্কুলের
এই পদ্ধতিতে অপরিপক্ক ডিম্বাশয়যুক্ত সুস্থ-সবল সকল দাঁড়াযুক্ত স্ত্রী কাঁকড়া প্রতিটি বাক্সে মজুত করে রাখা হয়। পরে পরিপক্ক ডিম্বাশয় কাঁকড়ায় পরিণত করে সেগুলিকে বাজারে পাঠানো হয় বিক্রির জন্য। অত্যাধুনিক এই পদ্ধতি অনুসরণ করে কাঁকড়াচাষিরা লাভের মুখ দেখছেন।