হলদিয়ায় বিশ্বকর্মা পুজো মানেই বিরাট এক উৎসব। বছরের পর বছর ধরে শিল্পনগরীর এটাই রীতি। তবে এবার বিশ্বকর্মা পুজোর বিরাট আয়োজন চোখে পড়ল না পূর্ব মেদিনীপুরের এ তল্লাটে। করোনার আঁধার পেরিয়ে এবারই প্রথম বিশ্বকর্মা পুজো। দেবশিল্পীর আরাধনা চললেও তা এবার কিন্তু আড়ম্বরহীন হলদিয়ায়। ছোট-বড়-মাঝারি কারখানাগুলিতে বিশ্বকর্মা পুজো হচ্ছে ঠিকই, তবে আগের সেই জৌলুস উধাও।
Advertisment
শিল্পশহর হলদিয়া। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এই প্রান্তে ছোট-বড়-মাঝারি মাপের বহু কারখানা রয়েছে। সেই বাম আমলের লক্ষ্মণ শেঠের আমল থেকেই হলদিয়ার বিশ্বকর্মা পুজো জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়ে আসছে। ২০১১ সালের পর থেকে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে হলদিয়ার বিশ্বকর্মা পুজো কার্যত একটি উৎসবে পরিণত হয়। বাংলা তো বটেই, এমনকী বলিউডের শিল্পীদের এনে লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করে পরপর কয়েক দিন ধরে চলত গান-বাজনার আসর। বিশ্বকর্মা পুজোকে কেন্দ্র করে বিপুল আয়োজন থাকত হলদিয়াজু়ডে।
গত দু'বছর করোনার জেরে এমনতিতেই সেভাবে সাড়ম্বরে বিশ্বকর্মার পুজোর আয়োজন হয়নি হলদিয়ায়। এর ওপর শুভেন্দু অধিকারীও এখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন। সম্প্রতি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে হলদিয়ার অধিকাংশ কারখানায় 'ইউনিয়নরাজ' জোর ধাক্কা খেয়েছে। বেশিরভাগ কারখানায় ইউনিয়নের গুরুত্ব কমেছে। যে কোনও ব্যাপারে এখন কারখানাগুলি সরাসরি যোগাযোগ করছে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে।
এর আগে হলদিয়ায় মহা সমারোহে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজনের দায়িত্বে থাকত কারখানার ইউনিয়নগুলি। ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা টাকা চাঁদা আদায় থেকে শুরু করে অন্য নানা সোর্স থেকে টাকা তুলে জাঁকজমকপূর্ণ বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন হতো। তবে এবার সেসব নেই। অধিকাংশ কারখানায় নতুন ইউনিয়ন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। পুজোর ভার প্রায় সবটাই সামলাতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষগুলিকে।