দুর্নীতির সঙ্গে কোনওভাবেই আপস করা হবে না। বেআইনি ভাবে স্কুলশিক্ষক এবং অ-শিক্ষক পদে কর্মরতদের উদ্দেশে বুধবার চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে ফের বোঝালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, টাকা ঘুষ দিয়ে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা নিজেরাই চাকরি থেকে পদত্যাগ করুন। ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ইস্তফার মেয়াদ। না হলে তাঁদের বরখাস্ত করা হবে। এঁরা যাতে ভবিষ্যতে আর কোনও সরকারি চাকরি না পান সেই ব্যবস্থা করবে আদালত।
অভিযোগ, রাজ্যে স্কুলশিক্ষক এবং অ-শিক্ষকদের নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলাতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রচুর সংখ্যক সাদা খাতা জমা দেওয়া হয়েছে। কিছু খাতায় শুধুমাত্র পাঁচ-ছ’টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। তার পরও ওই চাকরিপ্রার্থীরা ৫৩ নম্বর পেয়েছেন। গ্রুপ ‘সি’ এবং গ্রুপ ‘ডি’-র পরীক্ষায়ও একই জিনিস হয়েছে।
এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বেআইনিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কড়া 'হয় ইস্তফা-নয় ব্যবস্থা'র বার্তা দেন।
বেআইনি ভাবে চাকরির সুপারিশপত্র কত জনকে দেওয়া হয়েছে তাও এ দিন জানতে চেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। নির্দেশে উল্লেখ, ৩ অক্টোবর এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে বৈঠক করতে হবে। সাদা খাতা জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে কাদের সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা-ও নিশ্চিত করে এসএসসি সিবিআইকে জানাবে।
সিবিআই দিল্লি, গাজিয়াবাদে হানা দিয়ে যে ভাবে মামলার মূল নথি উদ্ধার করেছে সেই জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রশংসা করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
মঙ্গলবারই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর প্রস্তাব ছিল যে, যাঁরা ব্যতিক্রমী ভাবে চাকরি পেয়েছেন তাঁদের কারও চাকরি বাতিলের পক্ষে নন মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্য নতুন পদও তৈরি করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অযোগ্যদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলে তাতেও প্রস্তুত রাজ্য। কিন্তু, আদালতের নির্দেশ মোতাবেকই কাজ করবে রাজ্য সরকার। এ দিন হাইকোর্টের নির্দেশের পর শিক্ষামন্ত্রীর সেই প্রস্তাব কার্যত খারিজ হয়ে গেল।