Advertisment

গরমে হাঁসফাঁস তিলোত্তমা, জল-বাতাসা বিলিয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন এই বৃদ্ধ, জানেন কেন?

বৃদ্ধের অবাক নেশাকে কুর্ণিশ আট থেকে আশির।

author-image
Shashi Ghosh
New Update
rahul amin gave water to passers by

শ্যামবাজার মোড়ে পথচলতি সাধারণ মানুষকে জল-বাতাসা খাওয়াচ্ছেন রহুল আমিন। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।

অবাক নেশা। প্রবল গরমে পরিস্রান্ত পথচলতি সাধারণ মানুষকে তিনি জল পান করান। বছরের পর বছর ধরে অভূতপূর্ব এই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অগুণিত ব্যক্তির প্রশংসা তো পেয়েছেনই, ট্রাফিক পুলিশের তরফেও তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আগে ঘুরে ঘুরে জল বিলি করতেন। তবে বয়সের ভারে এখন আর বিশেষ এদিক-ওদিক করতে পারেন না তিনি। শ্যামবাজার মোড়েই মস্ত জলের ড্রাম নিয়ে বসেই চলে জল-দান।

Advertisment

রুহুল আমিন, ৭৬ বছরের এই বৃদ্ধই গত ১৪ বছর ধরে পথচলতি সাধারণ মানুষকে নিখচরায় জল-বাতাসা খাইয়ে চলেছেন। শুরুটা হয়েছিল ২০১০ সালে। সেই সময়ে টালা ব্রিজের কাছে যত গাছ ছিল সেই গাছের পাখিদের জল-খাবার দিতেন তিনি। এরপর প্রচণ্ড গরমে রহুল আমিন অনুভব করেন যে শুধুমাত্র পাখিদের নয়, অনেকে রাস্তায় জলের অভাবে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদেরও তিনি জল পান করাবেন।

publive-image
রহুল আমিনের ছোট্ট টেবিলে রাখা রয়েছে জল-বাতাসা। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।

প্রথম দিকে তিনি মাটির কলসিতে জল রেখে দিতেন টালা ব্রিজের কাছে। ব্রিজ ভেঙে ফেলার পরে তিনি একটি ৮০লিটারের জলের ড্রাম কেনেন। সেই ড্রাম নিয়ে এরপর সকাল হলেই বেরিয়ে পড়তেন। ড্রামের জল শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘুরে বেড়াতেন। রহুল আমিন বলেন, "আমি নিজে ছোটখাটো ব্যবসা করতাম। একটা সময় বুঝতে পারি মানুষের জন্যে কিছু করা উচিত। এই বৃদ্ধ বয়সে মানুষের জন্যে কিছু করার তাগিদ থেকেই শুরু মানুষকে জল খাওয়ানো। নিজেই কিনলাম ৮০ লিটারের ড্রাম। সেই ড্রাম টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য বানালাম লোহার পাতে চাকা দেওয়া গাড়ি। যাতে টানতে সুবিধে হয়। নিজের জমানো টাকা থেকে বাতাসা কিনে বেরিয়ে পড়লাম। এখন শ্যামবাজারে মোড়ে জলের ড্রাম নিয়ে বসি।''

publive-image
পথচলতি এক স্কুলছাত্রকে জল-দান। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।

তিনি আরও বলেন, 'বয়স হচ্ছে তাই বাড়ির বউ, ছেলেমেয়েরা সকলে বকাবকি করে। ছেলেরা সব চাকরি করে তাও আমার এটাই করতে ভালো লাগে।" ৭৬ বছরের এই বৃদ্ধ শ্যামবাজার মোড়ের কাছেই একটা ছোট টেবিলের উপর জলের বোতল সাজিয়ে সকাল হতেই বসে পড়েন এরপর জল শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকে।

publive-image
রহুল আমিন নিজে হাতে বাতাসা তুলে দিচ্ছেন পথচারীদের। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।
publive-image
এক বাস কন্ডাক্টরকে জল দিচ্ছেন বৃদ্ধ রহুল আমিন। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।

কাছাকাছি কেউ এলেই এগিয়ে দেন জলের বোতল এবং গ্লাস। বাস সঠিক জায়গায় না দাঁড়ালে তিনি ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার কথাও বলেন। ড্রাইভার থেকে কন্ডাক্টর, পথ চলতি মানুষ থেকে ভবঘুরে কেউ সবাইকে জল খাওয়াতে পেরে তিনি খুশি। রহুল আমিন তাঁর এই কর্মকান্ডের জন্যে পেয়েছেন অনেক সম্মাননা। ট্রাফিক গার্ডের তরফে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

kolkata news West Bengal Rahul Amin
Advertisment