পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে সংঘাত ছিল মাঠে-ময়দানে। ভোট মিটতেই নবান্ন ও রাজভবনের সেই সংঘাত এবার আরও তীব্র হয়ে গড়াল প্রশাসনিক কৌশলে। আগেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁর প্রধান সচিবের পদ থেকে নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। এবার রাজ্যপাল সরিয়ে দিলেন তাঁর প্রেস সচিব শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। নিয়মমাফিক রাজ্যপালের কাছে কারা সচিব নিযুক্ত হবেন, তার তালিকা রাজ্য সরকার পাঠায়। সেই তালিকা থেকে রাজ্যপাল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে সচিব বেছে নেন।
তবে, এখনও পর্যন্ত নন্দিনী চক্রবর্তীর জায়গায় কাউকেই রাজভবন প্রধান সচিব নিযুক্ত করেনি। অতীতে যখন নন্দিনী চক্রবর্তীকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁর প্রধান সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন, তখন নানা জল্পনা রটেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদে থাকলেও নন্দিনী চক্রবর্তী রাজ্যের তৃণমূল সরকারের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করছেন। যা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এবার শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিনা ব্যাখ্যায় রাজ্যপাল সরিয়ে দেওয়ার পর সেই একইরকম জল্পনা চাউর হয়েছে।
যে জল্পনার অন্যতম হল, রাজ্যপালকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় হিংসার যাবতীয় খবরাখবর দেওয়া হয়নি। সেই কারণেই রাজ্যপালের কাছে দাবি উঠেছিল তাঁর প্রেস সচিবকে সরিয়ে দেওয়ার। সেই দাবি মেনেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস পদক্ষেপ করলেন। তবে, এনিয়ে রাজভবনের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। তবে, এই সব জল্পনা উসকে দিয়ে নন্দিনী চক্রবর্তীর বেলায় রাজভবন থেকে রিলিজ হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে পর্যটন সচিব করে দিয়েছিল নবান্ন। একইভাবে শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নবান্নে তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের পুরোনো পদে চটজলদি ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলেই খবর।
আরও পড়ুন- তৃণমূলে মহাবিদ্রোহের আশঙ্কা? ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে মমতা-অভিষেক বাদে অন্যদের ছবিতে ‘না’
অথচ, এই শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কেই রাজ্যপাল নবান্নের পাঠানো তালিকা থেকে রীতিমতো ইন্টারভিউ নিয়ে বেছে নিয়েছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাজভবনে এই তালিকা পাঠিয়েছিল নবান্ন। অবশ্য রাজ্যপাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহাকেও নিয়োগ করেছিলেন। পরে, অবশ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক হিংসার জেরে সেই নিয়োগের জন্য দুঃখপ্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছে রাজ্যপালকে। অপসারণের পর অনেকে সেই ঘটনার সঙ্গে শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন।