অস্বস্তি বাড়তে চলেছে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের। সারদাকাণ্ডে এবার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করতে পারে সিবিআই। সূত্রের খবর, কলকাতার প্রাক্তন নগরপালের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করতে পারে সিবিআই। শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদে কী তথ্য উঠে এসেছে, তা নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে সিবিআই সদর দফতর। এজন্য দুই তদন্তকারী আধিকারিককে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে বলেও খবর।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সমস্ত নথি চেয়ে পাঠিয়েছেন সিবিআই-এর শীর্ষ কর্তারা। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করেই রাজীব কুমারের নামে চার্জশিট পেশ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শিলংয়ে টানা ৫ দিন ধরে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে রাজীবের জন্য একগুচ্ছ প্রশ্নমালা সাজান তদন্তকারী আধিকারিকরা। দু’দিন রাজীব কুমারের সঙ্গে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষকে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়। এরপরই জানা যায়, কলকাতার প্রাক্তন সিপিকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন, বয়ান রেকর্ড শেষ, কলকাতা ফিরলেন রাজীব কুমার
জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলাকালীন রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন কুণাল ঘোষ। শিলং থেকে ফেরার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে কুণাল অভিযোগ করেন, "আমি সিবিআই-কে লিখিত অভিযোগ করেছি। প্রথম, ১০ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) এবং এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) আমাদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রবিবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু এই তদন্তে তাঁরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী, তাই সে বিষয়ে মন্তব্য করব না। তবে সেদিন রাতেই সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে রাজীব কুমার ওই আধিকারিকদের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।"
অন্যদিকে, শিলংয়ে সিবিআই দফতরে নজিরবিহীন গোপনীয়তায় কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের জিজ্ঞাসাবাদ চলেছিল। সূত্রের খবর, যে ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া হয়েছিল, সেখানে তদন্তকারী আধিকারিকরা ছাড়া কোনও প্রকার ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস পর্যন্ত রাখতে দেওয়া হয়নি। এমনকি শিলং-এর সিবিআইয়ের দফতরে যাবতীয় কম্পিউটারও সরিয়ে দেওয়া হয়। টিভি এবং কেবল সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল বলে খবর।
আরও পড়ুন, রাজীব কুমার রাতে ফোন করেছেন, বিস্ফোরক অভিযোগ কুণাল ঘোষের
এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় লাউডন স্ট্রিটে কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের সরকারি বাসভবনে হানা দেয় সিবিআইয়ের একটি দল। এই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই ‘নিরপেক্ষ’ জায়গা হিসেবে শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।