গত কয়েকবছর ধরেই রামনবমী উৎসবকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছে বাংলার রাজনীতি। একসময় হিন্দুত্বপন্থী সংগঠনগুলি রাজ্য়ব্যাপী আয়োজন করত এই উৎসবের। পরবর্তীতে তৃণমূল নেতৃত্বও রামনবমী উদযাপনে শামিল হয়েছেন। এক কথায়, রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধর্মীয় উৎসব। তবে বিশ্বজোড়া করোনার আবহে এবং দেশে সে জন্য লকডাউন চলায় দক্ষিণবঙ্গের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কর্তারা জানিয়েছেন, এবার সমস্তরকম শোভাযাত্রা ও বড় অনুষ্ঠান বন্ধ।
করোনার কারণেই রাজ্যে উৎসব আয়োজনে কাটছাঁট করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। পরিষদের সর্বভারতীয় সহ সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, "রামনবমীর শোভাযাত্রা করব না। বাকি পুজো, অনুষ্ঠান হবে ছোটখাটো ভাবে। করোনা পরিস্থিতিতে একটা ভয়ের পরিবেশ রয়েছে। সরকার যেভাবে নির্দেশ দিয়েছে, সেভাবেই সব করা উচিত। রামনবমী প্রতি বছর আসবে। কিন্তু এখন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। আগামী দিনে কী হতে চলেছে তা আমরাও বুঝতে পারছি না।"
আরও পড়ুন: লকডাউনকে থোড়াই কেয়ার! করোনা থেকে বাঁচতে বাংলায় রামমন্দিরে ভক্ত সমাগম
মূলত বিশ্ব হিন্দু পরিষদই বহু বছর ধরেই রাজ্যে রামনবমী উৎসব পালন করে আসছে। বিগত কয়েক বছর ধরে শোভাযাত্রার বহর ছিল চোখে পড়ার মত। রামনবমী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গেরুয়া শিবির রাজনৈতিক ফায়দা লাভ করে, এই অভিযোগ করে আসছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বকেও দেখা যায় রামনবমী উৎসবে শামিল হতে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করে, এই উৎসবকে ঘিরে বাংলায় রাজনৈতিক আকচাআকচি বেড়ে গিয়েছে। এর মধ্য়ে আবার পুলিশের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠতে থাকে। তবে করোনার আবহে আপাতত রামনবমী উৎসবকে ঘিরে সমস্ত উত্তেজনা থিতিয়ে গিয়েছে।
এবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রামনবমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বা বড় জমায়েত, কোনওটাই করা হবে না। এর পরিবর্তে ঘরোয়াভাবে পালন করা হবে রামনবমী উৎসব। পরিষদের মিডিয়া ইনচার্জ সৌরীশ মুখোপাধ্যায় বলেন, "রামনবমী উপলক্ষে দক্ষিণবঙ্গে পাঁচশর বেশি শোভাযাত্রা হত। এবার বাড়িতে বাড়িতে অনুষ্ঠান হচ্ছে। ১০৮ বার রাম নাম করা হবে দফতরগুলিতে। আমাদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। তাই জমায়েত করার কোনও প্রশ্ন ওঠে না।"