পরিবেশ রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পরিবেশবন্ধব সাইকেলে চেপে বারুইপুর থেকে নেপাল পাড়ি দিলেন বছর বিয়াল্লিশের রামপ্রসাদ নস্কর। বৃহস্পতিবার বারুইপুর প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করেন রামপ্রসাদ। পতাকা নেড়ে তাঁর যাত্রার সূচনা করেন বারুইপুরের মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দার।
ছোটবেলায় প্রায় দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতেন। মাধ্যমিক পাস করেছেন পায়ে হেঁটেই । ১৯৯৫ সালে প্রথম সাইকেল কিনে দেন বাবা। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত কোনওদিন কোনও যানবাহনে চাপেননি রামপ্রসাদ। সাইকেলে করে তিনি বিয়ে করতেও গিয়েছিলেন। তার মত সাইকেল পরিবেশবান্ধব।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কেনাকাটাও প্রায় শেষ পর্যায়। উৎসবে জমিয়ে আড্ডা পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, প্যান্ডেল হপিং অথবা সপরিবারে কোন নির্জন স্থানে গিয়ে ছুটি কাটানো- সাধারণত এটাই আম বাঙালির ভালোলাগা। ব্যতিক্রমি সুভাষ গ্রামের পার্শ্বশিক্ষক রামপ্রসাদ নস্কর। সারা বছরের গচ্ছিত অর্থ নিয়ে পাড়ি দিলেন নেপালে।
রেকর্ড নয় মানুষকে সচেতন করতে, তার এই সাইকেল নিয়ে যাত্রা। অনেকেরই সাইকেল নিয়ে ঘুরতে যাবার প্রবণতা রয়েছে । কিন্তু সেখানে অবশ্যই অত্যাধুনিক সাইকেল ব্যবহার করা হয়। রামপ্রসাদ এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রমী। দীর্ঘ পথের যাত্রায় তাঁর সঙ্গী মান্ধাতা আমলের সাইকেল।
রামপ্রসাদ ইতিমধ্যে সাইকেলে চেপে ঘুরে ফেলেছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা। ঘোরার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার বার্তাও ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বত্র। গাছ লাগানো, প্লাস্টিক বর্জনের পাশাপাশি পরিবেশ বাঁচাতে মোটরগাড়ি ছেড়ে সাইকেল চালানোর কথাও মানুষকে বোঝান তিনি। করোনা পরিস্থিতির জন্য মাঝে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল সফর। পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হতেই তিনি নেপাল যাত্রার প্রস্তুতি শুরু করেন।
এ দিন রামপ্রসাদকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা বাবা, মা, স্ত্রী। রামপ্রসাদ বলেন, “পরিবেশই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। আমাদেরও পরিবেশকে বাঁচাতে হবে। পরিবেশ না বাঁচলে করোনার থেকেও বড় মহামারি আসবে। পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দিতেই আমার এই যাত্রা।” মোটামুটি দু’মাসের প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়েছেন রমাপ্রসাদ। যাত্রাপথ কেমন? সে ব্যাপারে তেমন ধারণা নেই তাঁর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন